আসাদ সবুজ, বরগুনা : বরগুনার বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সমালোচনা করতে বাদ যায়নি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দও। অযোগ্যদের কমিটি দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

রবিবার (০৯ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত প্যাডে হাসিবুর রহমানকে সভাপতি ও হাসানুজ্জামান সেতুকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়। একই সাথে বামনা সরকারি কলেজ ও বামনা সদর ইউনিয়ন শাখারও আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়।

পরে রাত দুইটার দিকে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের ফেজবুক ওয়ালে কোন প্রকার কারন উল্লেখ না করেই পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত, বামনা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করে।

কমিটির ঘোষনার পরেই রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু তার ফেজবুক ওয়ালে লেখেন, "অযোগ্য লোকেরা অযোগ্য লোকদের দ্বারাই রাজনীতি করাবে এটাই তো তাদের কাজ। টাকাই রাজনীতিকে হটিয়ে দিলেন। টাকার কাছে রাজনীতি বিক্রীত হচ্ছে। মাননীয় সভানেত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ফ্যাক্টঃ বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটি।"

সদ্য সাবেক বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হোসেন জনি তার ফেজবুক ওয়ালে লিখেছেন, "কত টাকা বিনিময় বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটি?"

বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা, আল আমিন হোসেন জনি'র পোস্টে মন্তব্যের কলামে (কমেন্ট) লিখেছেন, "বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে সাবেক ছাত্র নেতাদের মতামত না নিয়ে কমিটি দেয়া হয়েছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।"

আল আমিন হোসেন জনি'র পোস্টের মন্তব্যের কলামে (কমেন্টে) রাফান জোমাদ্দার আকাশ নামের একজন লিখেছেন, " ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি হলো"।

আবুল হোসেন হৃদয় নামের একজন মন্তব্য করেছেন, "হায়রে কমিটি তামাসার কমিটি দিল, বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের, এখন নেতা টাকায় হওয়া যায়,"

সাইফুর রহমান বেল্লাল নামের একজন মন্তব্য করেছেন, "ভাই বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ আযোগ্য ছাত্রলীগ। তাই গঠনতন্ত্র না মেনেই কমিটি দিছে।"

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা বলেন, বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকেই প্রার্থী ছিলো। বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য, বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী এদের মধ্যে যারা যোগ্য ও জনপ্রিয় তাদেরকে কমিটি দেওয়া হয়েছে। সময় স্বল্পতার কারনে হয়তো অনেক সাবেক ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ধর্ষণের অভিযোগে থাকা সত্যেও সদ্য ঘোষিত বামনা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে কিভাবে একজন সহ-সভাপতি মনোনীত হয়েছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আমরা এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তবে আমাদের ঘোষিত কমিটির নীচে লেখা আছে, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(এএস/এসপি/এপ্রিল ১০, ২০২৩)