সাজিরুল ইসলাম সঞ্চয়, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যাবহৃত এস এম জি, কাটা রাইফেলসহ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। 

শুক্রবার গভীর রাতে জেলার তাড়াশ উপজেলার দোগাড়িয়া ঈদগাহ মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃতদের দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যাবহৃত অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি চলনবিল শাখার সক্রিয় সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসের উপর গুলিবর্শনকারি জহুরুল ইসলাম তুষার, বিশ্বনাথ মহন্ত, মোঃ শহিদুল ইসলাম, বলরাম চন্দ্র দাস, উত্তম চন্দ্র দাস, মোঃ রহমত আলী-১, মোঃ রহমত আলী-২ ও সুনীল উরাও।

শনিবার বেলা সাড়ে বারটার দিকে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার‌্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন (বিপিএম, পিপিএম) এ তথ্য জানান।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডলের (বিপিএম-বার, পিপিএম-বার) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বগুড়ার শেরপুরের একটি ঘটনায় পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী প্রদান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ি তাড়াশের দেশিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসকে হত্যা করা হয়েছে।

দুই মাস আগে হত্যাকান্ডটি ঘটার পর থেকে পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল (বিপিএম-বার, পিপিএম-বার) এর সার্বিক নির্দেশনায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ রওশন আলী, উপ-পরিদর্শক মো: জুলহাজ উদ্দিন (বিপিএম, পিপিএম), ওয়াদুদ আলী (বিপিএম) ও সহকারি উপ-পরিদর্শক মো: মিন্টু মিয়া (পিপিএম) এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে হত্যাকারিদের গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যাবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে সক্ষম হয়।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ই ফেব্রুয়ারী সিরাজগঞ্জ জেলাধীন তাড়াশের ভোগলমান বাজারে সন্ধ্যাকালীন সময়ে শত শত লোক সমাগমের মধ্যে মুখোশধারী আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী ১৪/১৫ জন সন্ত্রাসী গুলি করে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগের প্রাক্তন সভাপতি আঃ কুদ্দুস সরকারকে হত্যা করে। হত্যাকারীরা হত্যা সংঘটনের পর বাজারে পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির লিফলেট এবং সর্বহারা পার্টি জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এক সময়ের সর্বহারা অধ্যুষিত এই জনপদ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় ১০/১২ বছর থেকে স্বাভাবিক অবস্থা চলমান থাকার মধ্যেই হঠাৎ এই হত্যাকান্ডের ঘটনা দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। হত্যাকান্ডের্ পরদিন অজ্ঞাতদের আসামি করে তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের বড়ছেলে।

(এস/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২৩)