রিপন মারমা, রাঙ্গামাটি : অন্যতম জনপ্রিয় গানটি গেয়ে যখন মারমা শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করলেন ঠিক সেই সময়ে হাজার হাজার লোকের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠে রাঙামাটি কাপ্তাই ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার মাঠ প্রাঙ্গণে। এ যেন প্রাণের উৎসবে মিলিত হয়েছেন তারা। সাংগ্রাঁই জল উৎসব উপলক্ষে বিহার সংলগ্ন মাঠে শনিবার সকাল ১০ টায় এক আলোচনা সভা ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিমং চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ্যাডভোকেট হ্লাথোয়াই মারমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কাপ্তাই ৪১ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাব্বির আহমেদ।

এসময় তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সংস্কৃতি খুবই সমৃদ্ধ। আর সামাজিক উৎসব এর মাধ্যমে এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। নববর্ষকে বরণ এবং পুরনো বর্ষকে বিদায় উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাঁই জল উৎসব উদযাপন করে থাকে।মারমা যুবক যুবতীরা একে অপরের প্রতি জল ছিঁটে পুরনো বছরের দুঃখ, গ্লানি, বেদনাকে ভূলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। এইসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে।

উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক ক্যচিংপ্রু মারমা জানান, মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাঁই উৎসবকে ঘিরে এখন উৎসবে আনন্দে মাতোয়ারা সমগ্র চিৎমরম এলাকা।

উৎসবকে ঘিরে নানা বর্ণের মানুষের আগমন ঘটেছে এই চিৎমরমে। অনুষ্ঠানে সদস্য সচিব পাইসুইউ মারমা জানান, এই সাংগ্রাঁই জল উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি'কে তুলে ধরেছি।

সকল ভেদাভেদ ভূলে আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নিব সাংগ্রাঁই জল উৎসবে অংশ নিতে আসা হ্লামে মারমা জানান, সাংগ্রাঁই জল উৎসব, আমাদের প্রাণের উৎসব। বছরের এই দিনে আমরা সকলে মিলিত হয়, আনন্দ করি।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি জেলা যুগ্ম জজ মিল্টন হোসেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা, চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আজম বাবু প্রমুখ। মূলত আগামীকাল ১৬ এপ্রিল বাঙালহালিয়া মূল সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব উদযাপন হবে।

(আরএম/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২৩)