দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে হাসিবুর রহমান ওরফে হাসিব মেম্বর নামে এক ইউপি সদস্যকে নিজ পরিষদ থেকে ডিবি পরিচয়ে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার মথুরাপুর ইউনয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। রবিবার বিকেল ৫ টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় থেকে সাদা পোষাক পরিহিত ডিবি পরিচয়ে ৬/৭ জন তাকে নিয়ে যায়। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তিনি আর ফিরে আসেননি। তবে ডিবি পুলিশ বলছে হাসিব নামে কাউকে তারা আটক বা উঠিয়ে নিয়ে যাননি। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম উৎকষ্ঠা বিরাজ করছে।

হাসিব মেম্বরের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদকে সামনে রেখে দুস্থদের মাঝে চাল বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে কারণে হাসিব মেম্বর রবিবার সারাদিনই ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৫ টার দিকে ৩টি মোটরসাইকেল যোগে ৬/৭ জন হাসিব মেম্বরের খোজে পরিষদে যান। এ সময় হাসিব মেম্বর পরিষদের সচিবের কক্ষে বসে ছিলেন। সাথে সচিব ও চৌকিদারও সেখানে ছিলেন। মোটরসাইকেলে আসা লোকজন বিডি পুলিশের সদস্য পরিচয় দেন এবং পাশের একটি বাজারে তাদের অফিসার বসে আসেন বলে হাসিব মেম্বরকে তারা নিয়ে যেতে চান। অফিসারের সাথে কথা শেষে আবার তাকে পরিষদের রেখে যাওয়া হবে বলে তারা জানান। পরে তিনি আর ফিরে আসেননি। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন বিডি পুলিশের অফিসে হাসিবের খোজ নিতে গেলে বিডি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে আসার কথা অস্বীকার করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুস সালাম বলেন, বিডি পুলিশের পরিচয় দিয়ে অফিসারের সাথে কথা বলার নাম করে হাসিব মেম্বরকে মোটরসাইকেল যোগে ৬/৭ নিয়ে যায়। কথা বলা হলে আবার তাকে পরিষদের পৌছে দেয়া হবে বললেও মেম্বরকে তারা আর ফেরত দেয়নি।

হাসিব মেম্বরের স্ত্রী উর্মি খাতুন বলেন, হাসিব মেম্বরকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে পরিষদ থেকে তুলে নিয়ে গেছে। অনেকেই এ ঘটনার স্বাক্ষি আছে। রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে অবস্থান করলেও বিডি তাকে নিয়ে আসার কথা অস্বীকার করছেন।

হাসিব মেম্বরের চাচা মোশারফ হোসেন বলেন, হাসিব মেম্বর বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি পরপর ৩ বার নির্বাচিত ইউপি সদস্য। তাকে ঘায়েল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার কবীর মিন্টু জানান, হাসিব মেম্বরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তুলে নেয়া হয়েছে। তিনি সে সময় পরিষদের উপস্থিত না থাকলেও সচিব ও চৌকিদাররা সেখানে ছিলেন। উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যাক্তিদের কাছে আর্মস ছিল যা অনেকে দেখেছে। একজন জনপ্রতিনিধিকে এভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে অস্বীকার করা খুবই দুঃখজনক।

হাসিবকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের ওসি সাব্বির আহমেদ বলেন, রবিবার ডিবি পুলিশের সদস্যরা হাসিব মেম্বর নামে কাউকে ধরে নিয়ে যাননি। র‌্যাব ও অন্য কোন সংস্থা নিয়েছে কিনা তা খোঁজ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, হাসিব মেম্বর নামে কাউকে তারা উঠিয়ে নিয়ে যাননি। কোন সংস্থা তাকে নিয়ে গেছে কিনা সে ব্যাপারেও কোন তথ্য দৌলতপুর থানায় নেই।

(এআর/এএস/এপ্রিল ১৭, ২০২৩)