আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশাল জেলার অন্যতম শষ্য উৎপাদনকারী উপজেলা হিসেবে পরিচিত আগৈলঝাড়ায় ঈদের আনন্দের সাথে নতুন ধান কাটার আনন্দে মেতেছেন চাষিরা। উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০হেক্টর জমি বেশী চাষাবাদ ও বেশী ফসল উৎপাদন হওয়ায় খুশি কৃষকেরা।
চলতি মৌসুমে ধানের বীজতলা তৈরী থেকে বীজ রোপন ও ফসল পাকা পর্যন্ত অনুকুল আবহাওয়ার কারণে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঈদের আগেই মাঠের ফসল পাকা শুরু করলেও ঈদের পরদিন থেকে ধান কাটার ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে এলাকায়। তবে এখনো চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত ধানকাটা শ্রমিকেরা এলাকায় না আসায় এবং আবহাওয়া অফিসের খবরে ঈদের পরে বৃস্টিপাত ও ঝড়ো বৃস্টির সমূহ সম্ভাবনার খবরে উঠতি পাকা ফসল ঘরে তোলা নিয়ে উৎকন্ঠায় রয়েছেন চাষিরা।

কৃষকেরা জানিয়েছেন, এলাকার বেশী জমি আবাদকারী চাষীদের ধান কাটার জন্য ফরিদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়িসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ধান কাটতে কন্টাক্ট শ্রমিকেরা দল বেঁধে এখনো আগৈলঝাড়ায় আসেনি। ঈদের পরেই তাদের ধান কাটতে আসার কথা রয়েছে। ওই ধানকাটা শ্রমিকেরা আসলেই এলাকায় ধান কাটার ভরা মৌসুম শুরু হবে। বর্তমানে কিছু জমির ধান দৈনিক শ্রমিক দিয়ে কাটাচ্ছেন চাষিরা। কিছু শ্রমিক আসলেও চলতি সপ্তাহেই পুরো শ্রমিকের দল চলে আসবেন বলেও জানান চাষিরা।

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার সুভাষ চন্দ্র মন্ডল জানান, সরকারী প্রনাদনার অংশ হিসেবে বোরো মৌসুমে সরকারের পুণর্বাসন বীজ সহায়তা ও প্রোণোদনার আওতায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৫হাজার ৩শ জন কৃষক পরিবারকে ২কেজি করে হাইব্রীড ধান বীজ ও ৫শ জনকে উফসী বীজ ও সার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দোলন চন্দ্র রায় জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৯হাজার ৪শ ১০হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল।
মোট আবাদী জমির মধ্যে ৯হাজার ১শ ৬০ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড ধান ও ২শ ৫০হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফসী) বোরো ধান আবাদ করা হয়। এরমধ্যে আগাম চাষ হয়েছিল ৩শ হেক্টর জমি। চাষাবাদকৃত জমিতে ফসল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৫০হাজার ৬শ ৯০মেট্টিক টন চাল। তবে অনুকূল আবহাওয়ার কারনে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০হেক্টর জমি বেশী চাষাবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার।

চলতি সপ্তাহ থেকে ফসল কাটার ভরা মৌসুম শুরু হবে জানিয়ে কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন মঙ্গলবার পর্যন্ত ২০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। মাঠের ৫০ ভাগ ধান পাকা ও ৩০ভাগ ধান কাচা রয়েছে। আবহাওয়া বৈরী না হলে চলতি সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে মাঠের সকল ফসল কাটা শেষ হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো সার প্রাপ্যতার কারণে মাঠের সর্বত্রই ফসল ভাল হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী ফলন হয়েছে।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ২৫, ২০২৩)