মিশুক আহমেদ জয়, কুষ্টিয়া : ঘুষ না দেওয়ায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ট্রেন কর্তৃপক্ষের সাথে যাত্রীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) বেলা পৌণে ১২ টার দিকে কুমারখালী রেলস্টেশনে এঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনটির সহকারি চালক ও দুই যাত্রী আহত হয়েছে।

আহতরা হলেন- মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের সহকারি চালক মো. জাহিদ হাসান, উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে মো. আসিফ (১৯)। তাঁদের মধ্যে আসিফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর সহকারি চালকের মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আহত আসিফ অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা ১৮ জন টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছিল। কিন্তু ট্রেনের বগিতে কোনো জায়গা না থাকায় তাঁরা ইঞ্জিন বগিতে উঠেছিল। সেখানে ওঠার কারনে সাদা পোশাক পড়া ট্রেন কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাঁর কাছে ৫০ টাকা ঘুষ দাবি করে। তিনি ঘুষ দিতে অসম্মতি জানালে ট্রেন কর্তৃপক্ষের একজন তাকে দুইটি থাপ্পড় মারে এবং লাথি দিয়ে তাঁর মালামাল নিচে ফেলা দেয়। এনিয়ে তাঁদের হাতাহাতি ও মারামারি হয়। এসময় তাঁর মাথা ফেটে গেছে এবং তাঁর বাবাকে মারপিট করে রেলের লোকজন তুলে নিয়ে গেছেন।

তবে ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, বেশকিছু শ্রমিক ধান কাটতে ভাঙ্গা যাওয়ার জন্য ট্রেনের ইঞ্জিনে উঠেছিল। ট্রেন কর্তৃপক্ষ ইঞ্জিনে উঠছে নিষেধ করায় শ্রমিকরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এসময় ট্রেনের সহকারি চালক জাহিদের মাথায় কাঁচি দিয়ে কোপ মারে শ্রমিকরা। তাঁর মাথায় সেলায় দেওয়া হয়েছে। একজন শ্রমিককে রেলওয়ে পুলিশ আটক করেছে বলে জানান তিনি।

সরেজমিন গিয়ে স্থানীয় ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কুমারখালী থেকে ১৮ জন শ্রমিক ধান কাটতে ভাঙ্গায় যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছিল। বগিতে সিট ও ফাঁকা জায়গা না থাকায় তাঁরা ট্রেনের ইঞ্জিন বগিতে উঠেছিলেন। এসময় ট্রেনের কর্তৃপক্ষ ঘুষ দাবি করে। শ্রমিকরা ঘুষ না দেওয়া তাঁদের মালামাল লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়ায় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে শ্রমিকদের সরদার মনোয়ার হোসেন বলেন, ট্রেনে জায়গা না থাকায় তাঁরা ইঞ্জিন বগিতে উঠেছিল। ওঠার সাথে সাথে সাদা পোশাক পড়া ট্রেনের লোকজন ৫০ করে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ট্রেন কর্তৃপক্ষ তাঁদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া শুরু করে। এনিয়ে দুইপক্ষের হাতাহাতি, মারামারি হয়। কুমারখালী রেলস্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাত মিনিট দেরিতে ১১ টা ৩০ মিনিটে স্টেশনে পৌছায়। আর ৪০ মিনিটের দিকে মারামারি শুরু হয়। এতে দুই পক্ষের দুইজন আহত হয়েছে। একজনকে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে কি নিয়ে মারামারি তা তিনি জানেনা। তিনি আরো বলেন, দুইপক্ষের সংঘর্ষের কারনে প্রায় ৩০ মিনিট দেরিতে ট্রেন ছাড়া হয়েছে।
পোড়াদহ রেলওয়ে থানার ওসি মো. এমদাদুল হক বলেন, তিনি অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত আছেন।

(এমজে/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২৩)