কেন্দুয়া প্রতিনিধি : ত্রিশ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি ও ভোকেশনাল কারিগরি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশ পত্রের বিনিময়ে প্রতি জনের কাছ থেকে ৮০০ টাকা আদায় করে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। যেসব পরীক্ষার্থী ৮০০ টাকা দিতে পারছে না তাদের এডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্র) আটকে দেওয়া হচ্ছে। অর্ধেক পরীক্ষার্থী  এখনও প্রবেশ পত্র হাতে পায়নি। কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা আব্দুল হামিদ স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামরুজ্জামান ভূইয়ার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠেছে। 

জানা যায়, ওই স্কুল এন্ড কলেজের সাধারন শাখার পরীক্ষার্থী ২১ জন এবং ভোকেশনাল কারিগরি শাখার পরীক্ষার্থী ৮৩ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে এডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্রের) বিনিময়ে ৮০০ টাকা ধার্য করে দেওয়া হলে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ৮০০ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ফলে তাদের এডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্র) আটকে দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে অনেক পরীক্ষার্থী কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর বৃহস্পতিবার একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

শুক্রবার সরেজমিনে গেলে পরীক্ষার্থী সাগর মিয়া জানান শুক্রবার দুপুরের আগে তার এডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্রের) বিনিময়ে জাকির মাস্টার ৮০০ টাকা নিয়েছেন। এ রকম আরো অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নেয়া হচ্ছে।

এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য কাজিম উদ্দিন খান ও গন্যমান্য ব্যক্তি রায়হান উদ্দিন আকন্দ, ফরিদ আকন্দ, জামাল উদ্দিন জানান পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্রের) বিনিময়ে প্রতি জনের কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এ অভিযোগ অনেক ছাত্র-ছাত্রীর মুখ থেকে তারা শুনেছেন এ নিয়ে দুই দিন ধরে ছাত্র শিক্ষকদের মধ্যে বিশৃংখলা চলছে।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে জাকির হোসেন মাস্টার বলেন, বিভিন্ন বকেয়া পাওনা সহ প্রধান শিক্ষক যেভাবে ধার্য করে দিয়েছেন সেভাবেই টাকা আদায় করছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ভূইয়া বলেন, সারা বছর ছাত্র-ছাত্রীরা বেতনসহ বিভিন্ন ফিসের টাকা দেয়না।

পরীক্ষার সময়েই আমরা বিভিন্ন বকেয়ার টাকা আদায় করে থাকি। সামনে এসএসসি ও ভোকেশনাল পরীক্ষা, কারো নিকট বকেয়া ৮০০ টাকা, কারো নিকট ১০০০ টাকা, কারো নিকট ৫০০ টাকা বা কারো নিকট ৩০০ টাকা আছে। যাদের বকেয়া আছে তাদের বকেয়ার টাকা আদায় করে নিচ্ছি। এডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্রের) বিনিময়ে কোন টাকা নেয়া হচ্ছে না। তবে প্রবেশ পত্র দেয়ার আগেই এ টাকা বকেয়া আদায় করে নিচ্ছি। আর যারা বকেয়া দিতে পারে না তাদেরকে পরীক্ষার আগে অথবা বাড়িতে এডমিট কার্ড পৌছে দেয়া হয়।

প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, এডমিট কার্ড দিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুঠো ফোনে জানতে চেয়েছিলেন আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একই কথা বলেছি। এ ব্যপারে শুক্রবার ৫.২৫মিনিটের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি, মুঠোফোনে কল করলেও অপর প্রান্ত থেকে তিনি রিসিভ করেন নি। যে কারনে তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী জালাল বলেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও গড়াডোবা আব্দুল হামিদ স্কুল এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন এডমিট কার্ডের বিনিময়ে কোন টাকা নেয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন বকেয়ার টাকা আদায় করা হচ্ছে এডমিট দেয়ার সময়। এর পরও বিষয়টি আগামীকাল আরো যাচাই বাচাই করা হবে।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২৩)