লক্ষ্মীপুরে ছেলের হাতে মা খুন
মাকে হত্যার আগে শয়তানের ছবি এঁকেছিল ছেলে
শিমুল সাহা, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে মমতাজ বেগমকে হত্যার দায়ে তার ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ। এর আগে দুপুরে পৌরসভার মজুপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি জানান, গ্রামের বাড়িতে মমতাজ ও তার বড় ছেলে বাপ্পী ঈদ উদযাপন করতে যান। কিন্তু ছোট ছেলে রকি সেখানে যায়নি। সে কোয়ার্টারেই ছিল তিনদিন ধরে। ছোট ছেলের সঙ্গে মমতাজের ব্যক্তিগত জীবনযাপন নিয়ে মনমালিন্য ছিল। সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকালে বড় ছেলে বাপ্পী তার মাকে বাসে উঠিয়ে দেয় বাড়িতে আসার জন্য। মমতাজ বেগম বাড়িতে আসলে রাতে ছোট ছেলে রকি ধারালো ছুরি দিয়ে মাকে হত্যা করে তারপর টুকরো টুকরো করে কেটে রেখে পালিয়ে যায়।
এর আগে একটি কাগজে ছবি এঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। হত্যার পর বড় ছেলে বাপ্পী বাড়িতে এসে দরজায় রক্ত দেখে ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় ঢুকে পুলিশ। ঢুকতেই একটি পাটি দিয়ে ঢাকা অবস্থায় মমতাজের বেগমের শরীরের কাটা অংশ দেখতে পাওয়া যায়। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কসাই যেভাবে মাংস কাটে, সেভাবে তার দুই হাত ও দুই পা কাটা হয়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) নিহত মমতাজের মেয়ে রোজি আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে সিসি টিভি পর্যবেক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রকিকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।
নিহত মমতাজ বেগম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। তার স্বামী সড়ক বিভাগে চাকরি করতেন। স্বামী মতিন মারা যাওয়ার পর থেকেই মমতাজ তার দুই ছেলে বাপ্পী ও রকিকে নিয়ে সড়ক বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করে আসছেন। তার বড় ছেলে বাপ্পী বর্তমানে মাষ্টার রুলে সড়ক বিভাগে কাজ করছে।
(এস/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২৩)