স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে আফগানিস্তানের নিচে বাংলাদেশের অবস্থানকে নাকচ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, এ সূচকে আফগানিস্তানের নিচে বাংলাদেশ হলে অনেক প্রশ্ন চলে আসে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করা হলে উল্টো তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপনাদের এটাই বিচার করতে হবে- আফগানিস্তানের নিচে যদি বাংলাদেশের অবস্থান থাকে, তাহলে সেই নির্ণায়ক সম্বন্ধে আমার মনে হয় সবার প্রশ্ন করা উচিত। এ প্রশ্ন আমি আপনাদের করছি, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার ব্যাপারে আফগানিস্তানের নিচে যদি বাংলাদেশ থাকে দেন দেয়ার ইজ এ লট অব কোয়েশ্চেনস টু বি আস্কড’।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৩ উপলক্ষে বুধবার (৩ মে) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত অধিকারের ভবিষ্যৎ গঠন (শেপিং এ ফিউচার অফ রাইটস) শীর্ষক প্যানেল আলোচনা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

বুধবার বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) জানায়, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। এ বছর ৩৫ দশমিক ৩১ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৩, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নিচে।

এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আছে ভুটান। দেশটির অবস্থান ৯০তম। দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নেপালের অবস্থান ৯৫তম। মালদ্বীপের অবস্থান ১০০তম, শ্রীলঙ্কার অবস্থান ১৩৫তম, পাকিস্তানের অবস্থান ১৫০তম, আফগানিস্তানের অবস্থান ১৫২তম ও ভারতের অবস্থান ১৬১তম।

ওটিটি আইনসহ আগামীতে আসা প্রত্যেক আইনের মধ্যে যারা সত্য সাংবাদিকতা করে তাদের সুরক্ষার জন্য বিধান থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা হলেই যে মামলা গ্রহণ করা হয় তা নয়। এটাকে একটা সেলে পাঠানো হয়। এসব কম্পলেইন প্রথমে আমরা সেখানে পাঠাই। এটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় অপরাধ নিশ্চিত করে এফআইএর বা মামলা হিসেবে কোর্টে গ্রহণ করা হয়। নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে এটা কেইস হতে পারে এ রকম কিছু অ্যাস্টাবলিশড না হওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, অনলাইন মিডিয়া ও সোস্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে এ দায়িত্বশীলতার অভাব দেখা দেয়। হরহামেশাই এ নিউ মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এ জন্য বিভিন্ন দেশে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হয়েছে। তবে এটা আগের তুলনায় অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। অপব্যবহার রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি।

অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে উপস্থিত ছিলেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের ইনচার্জ সুজান ভাইজ, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক ড. গীতি আরা নাসরিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ আইনের পরিশুদ্ধ করলেও তাতে এর অপব্যবহার কমবে না।

(ওএস/এসপি/মে ০৩, ২০২৩)