আবীর আহাদ


আমি কোনো নেতা নই। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আমার অবস্থান। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক বড়ো বড়ো নেতা আছেন। অনেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান ছিলেন, সামনে আবার চেয়ারম্যান হবার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু সবাই বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, একবারের জন্য কি সেসব নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যানরা মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃখ ব্যথা হতাশা ও কান্নার কথা কোথাও তুলে ধরেছেন কিনা?একটিবার কি কোনো সান্ত্বনা বাণী উচ্চারণ করেছেন বা করেন কিনা?

আমি তো করে যাচ্ছি। অনেকেই করেছেন। করছেন। নিরন্তর তাদের জাতীয় মর্যাদা, আশা-আকাঙ্খা, দাবি-দাওয়া নিয়ে পদযাত্রা, সেমিনার, আলোচনা সভা, সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি পেশ ইত্যাদি কর্মসূচির পাশাপাশি প্রচুর লেখালেখি ও সাংগঠনিক উপায়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে দেনদরবার করে আসছি। কর্তৃপক্ষ কিছু দাবি মেনেছেন, কিছু দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। বলা চলে, প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানান অভাব-অভিযোগ এবং দাবিদাওয়া তুলে ধরতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কারো কারো রোষানলে পড়েছি। তারপরও অনেকের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে বিরামহীন প্রচেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছি।

এ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পশ্চাতে বা সামনে সেসব বড়ো বড়ো নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যানরা যদি একটু সহযোগিতা করতেন, তাহলে সারা দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংগ্রামী চেতনার উন্মেষ ঘটতো। এ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবিদাওয়া বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন। কিন্তু সকলই গরল ভেলো! সেসব বড়ো বড়ো নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যানরা সবাই নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়ে বুঁদ হয়ে বসে আছেন! প্রত্যাশা করছেন, কীভাবে যেনোতেনো উপায়ে কারো পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান হতে পারেন। চলছে পর্দার অন্তরালে তারই প্রচেষ্টা। আমার বদ্ধমূল ধারণা, দেশের সচেতন ও শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত আছেন।

লেখক : চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।