আবীর আহাদ


তথাকথিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নিয়ম কানুন ও নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে যত্রতত্র যাকেতাকে 'মুক্তিযোদ্ধা' বানানোর নামে স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বেদীমূলে কুঠারাঘাত হেনে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কিত করছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! জামুকা নামক সংস্থার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থে বঙ্গবন্ধু প্রণীত মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা বাদ দিয়ে মনগড়া সংজ্ঞা ও নির্দেশনা দিয়ে অর্থ আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যাকেতাকে, এমনকি রাজাকারদেরও মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে চলেছেন! এর মধ্য দিয়ে তারা বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধ, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কলঙ্কের কালিমা এঁকে দিচ্ছে!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিসহ 'মুক্তিযোদ্ধা' নামটিকে ব্যবসার পুঁজি বানিয়ে সওদা করে চলেছে! সাম্প্রতিক হাইকোর্ট এক বিস্ময়কর বিতর্কিত রায় দিয়েছে যে, একবার কারো নামে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট হয়ে গেলে, তিনি যদি অমুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হন, তাহলেও তার গেজেট বাতিল করা যাবে না! হাইকোর্টের এ রায়ে অনুপ্রাণিত হয়ে জামুকা আরো সোল্লাসে যাকেতাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েই চলেছে! এটা চলতে পারে না। জাতীয় মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য ও চেতনার স্বার্থে জামুকার চেয়ারম্যান ও সদস্যদের এক্ষুণি থামাতে হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! পাশাপাশি জামুকা বাতিল করে উচ্চতর আদালত, সামরিক বাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধকাশীন কমান্ডারদের নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কমিশন গঠন করে দেন, যাতে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার আলোকে একটি সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণীত হয়। আর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের কারিগরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষা করুন। এটাই আপনার কাছে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসীর একান্ত কামনা।

লেখক : চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।