গৌরীপুর প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের কালো প্রজাতির ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষক শেখ সাদী। তিনি গত বছরের ডিসেম্বরে বগুড়া থেকে অনলাইনে ৪শ টাকা কেজি দরে ইন্দোনেশিয়ান কালোধানের ২ কেজি ও ভিয়েতনাম প্রজাতির কালোধানের ১ কেজি বীজ সংগ্রহ করেন। বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে চলতি বছরের জানুয়ারিতে উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের কড়মড়িয়া গ্রামে নিজের ৭০ শতাংশ জমিতে কালোধান আবাদ করেন এই কৃষক।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জমি থেকে কালোধান কাটার পর কাঠা প্রতি সাড়ে ১২ মণ ধান পান এই কৃষক। কালোধান উৎপাদন করতে কাঠা প্রতি খরচ হয় ১৬১৮ টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালোধান চাষাবাদ অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতোই। এতে কোনো অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না আলাদা কোন পরিচর্যার। এই ধানে পোকামাকড় ও রোগবালাই কম হয়।

কালো ধানগাছের পাতা ও কান্ডের রং সবুজ হলেও ধান ও চালের রং কালো। সাধারণ ধানের তুলনায় কালোধানের দাম ও পুষ্টিগুণ অন্তত তিনগুণ বেশি। এই ধানের চালে অ্যান্থসায়ানিন বেশি থাকে যা ক্যান্সার প্রতিরোধী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়াও এই চাল ডায়বেটিস প্রতিরোধেও কার্যকরী।

প্রাচীন চীনে কালোচালের পরিচিতি ছিল নিষিদ্ধ হিসাবে। কালোচালের পুষ্টিগুণের কারণে সম্রাট ও তার পরিষদের লোকজন ছাড়া প্রজাদের জন্য কালোধান চাষাবাদ ও কালোচাল খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। কিন্ত সময় পাল্টেছে। ইউটিউবে কালোধানের চাষাবাদ দেখে প্রথমবারের মত ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের কড়মড়িয়া গ্রামের কৃষক শেখ সাদী এই ধান আবাদ করেন। বাম্পার ফলনও পেয়েছেন।

কৃষক শেখ সাদী বলেন, কালোধান চাষে আমি প্রতি কাঠায় সাড়ে ১২ মণ ধান পাওয়ায় গ্রামের অন্যান্য কৃষক এই ধান চাষে আগ্রহ দেখোচ্ছে। আমি এই কালোধান বিক্রি না করে ধান থেকে বীজ সংগ্রহ করবো। যেন কৃষকরা এই ধান বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করতে পারে।

উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, সাধারণ ধানের তুলনায় কালোধানের পুষ্টিগুণ ও দাম অনেক বেশি। নতুন হওয়ায় এই ধানের চাহিদা স্থানীয়ভাবে কম। তবে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন সুপারশপে এই ধানের চালের চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষক ধানের চেয়ে চাল বিক্রি করলে বেশি লাভবান হবে।

(এস/এসপি/মে ০৮, ২০২৩)