স্টাফ রিপোর্টার : চোরাই পথে বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে থেকে আসা সোনার ২৫৯ কেজি যোগ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। আন্তর্জাতিক বাজার দরে এ সব সোনা কিনেছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। আর কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ভল্টে অস্থায়ী খাতে বর্তমানে আরো ২৭৩ কেজি সোনা জমা আছে।

এর বাইরে আটক হওয়া অনেক সোনা এরই মধ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। চোরাই পথে আনা অনেক সোনা আদালতের মধ্যস্থতায় শুল্কের বিনিময়ে মালিককে ফেরত দেয়া হয়েছে। গত শনিবার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে আটক হওয়া ১০৫ কেজি সোনা আগামী দুই একদিনের মধ্যে কেন্দ্রিয় ব্যাংকে জমা হবে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘সোনা চোরাচালান ধরার পর দাবিদার না পাওয়া গেলে সরাসরি তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্থায়ী খাতে জমা হয়। আর দাবিদার পাওয়া গেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থায়ী বা অস্থায়ী খাতে জমা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দাবিদার আদালতে মুচলেকা দিয়ে নির্ধারিত হারে শুল্ক পরিশোধ করে সোনার চালান ছাড়িয়ে নেন। আর যেসব ক্ষেত্রে দাবিদার পাওয়া যায় না বা আদালত থেকে দাবিদারের বিপক্ষে রায় য়ায় তা নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়।’

তিনি জানান, গত শনিবার আটক হওয়া সোনা এখনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা হয়নি। তবে দুই একদিনের মধ্যে এ বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে পারে।

সম্প্রতি সোনার চোরাচালান অনেক বেড়ে গেছে। গত কয়েক মাসে ঢাকার শাহজালাল ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে কয়েকটি বড় চালান আটক হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দুবাই থেকে আসা একটি বিমানের টয়লেট থেকে ১০৫ কেজি সোনা আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আটক হওয়া সব সোনাই কিছু প্রক্রিয়া শেষে পাঠানো হয় কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ভল্টে। এর পর যদি ওই সোনার দাবিদার না থাকে তখন তা নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়। আর দাবিদার থাকলে মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত নিলামের জন্য অপেক্ষা করা হয়।

নিলাম কমিটিতে কেন্দ্রিয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের একজন করে প্রতিনিধি থাকেন। মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আটক সোনা কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ভল্টে অস্থায়ী খাতে জমা থাকে। নিলাম কমিটি বিক্রির টাকা নিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। তবে এসব সোনার গ্রেড যদি আন্তর্জাতিক মানের হয় তখন অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রিয় ব্যাংক আন্তর্জাতিক বাজার দরে তা কিনে নেয়। এক্ষেত্রেও বিক্রির টাকা জমা করা হয় সরকারি কোষাগারে।

কেন্দ্রিয় ব্যাংকের তথ্য মতে, আটক হওয়া সোনার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে জমা হওয়া ২৫৮ কেজি ৮৬৮ গ্রাম সোনার ২৪৫ কেজি ২৬৭ গ্রাম রয়েছে সোনার বার। আর স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে ১৩ কেজি ৬০১ গ্রাম। এছাড়া ব্যাংকের ভল্টে অস্থায়ী খাতে থাকা ৭২৩ কেজি সোনার মধ্যে বার রয়েছে ৫২৭ কেজি ৮৪৩ গ্রাম। আর স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে ১৯৫ কেজি ২৪ গ্রাম।

(ওএস/এটি/এপ্রিল ২৯, ২০১৪)