বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের বড়লেখার ছিটমহল খ্যাত বোবারতলসহ দশ গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছোটলেখা-গ্রামতলা রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সোয়া চার কিলোমিটার রাস্তা বোবারতল, পূর্ব গ্রামতলা, পূর্ব মোহামাম্মদনগর, পশ্চিম মোহাম্মদনগর, কৃষ্ণনগর, উত্তর ডিমাই, পূর্ব ডিমাই, খাগালাসহ প্রায় ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ, দুইটি চা বাগান ও ছয়টি পানপুঞ্জিবাসীর দুর্ভোগের কারণ। একেতো সংস্কার বিহীন তার ওপর ট্রাক-ট্রাক্টরের অবৈধভাবে পাহাড়-টিলা কেটে মাটি পরিবহনের কারণে রাস্তাটি আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।  

জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্তঘেষা বোবারতলসহ আশপাশের গ্রামগুলো বড়লেখার ফলমূল ও সবজি ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। এ এলাকার শাক সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উপজেলা ও জেলায় বিক্রি করা হয়। এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে উপজেলা সদরে সপ্তাহে দুইদিন শাক সবজি ও ফলমুলের পাইকারী হাট বসে। এক সময় বাহিরের ক্রেতারা সরাসরি বোবারতলে গিয়ে টাটকা শাক সবজি ক্রয় করত। এতে দরিদ্র কৃষকরা উৎপাদিত পন্যের ভাল দাম পেত এবং উৎপাদনে আগ্রহী হত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি খানা খন্দে ভরে থাকায় চাষীরা আগের মত মূল্য পায় না।

সবজি ও পণ্য বাজারজাতকরণে উৎপাদন কারীর ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়ছে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। ভূক্তভূগী সবজি ও ফল চাষী ছাড়াও এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম, আলতাব হোসেন জুনেদ, এম তারেক হাসনাত, তানবির হোসেন জানান, এলাকার জনগণ, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী, চা বাগান, বর্ণিত গ্রাম সমূহের সফল সবজি এবং ফলমূল উৎপাদন কারিদের পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে, ন্যায্য মূল্য পাওয়ার স্বার্থে ও উপজেলার বাহিরের ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাস্তাটির দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন।

সংস্কারবিহীন ছোটলেখা-গ্রামতলা সড়কের সোয়া চার কিলোমিটার এলাকার বেহাল দশায় এখন জনদুভোর্গ চরমে। সড়কটির অধিকাংশ খানাখন্দে ভরে গেছে। দেখলে মনে হয় যেন এটি কোন সড়ক নয়, যেন ডোবা। যানবাহনের জন্য সড়কটি হয়ে উঠছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সড়কের বড়বড় গর্তে পানি জমে থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনায় পড়ছে অটোরিকশা (সিএনজি) ও মোটরসাইকেল আরোহী। গ্রামীণ এই সড়কটি সর্বশেষ ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে সংস্কার কাজ হয়। এরপর সড়ক নীতি মালার গ্যাড়াকলে অদ্যাবদি সংস্কার হয়নি। উপজেলার অনেক গ্রামীণ সড়ক এখন সড়ক নীতিমালার গ্যাড়াকলে বন্দি হয়ে সংস্কার বিহীন রয়েছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়ক নীতিমালা সর্বশেষ সংশোধনী (২০১১) অনুযায়ী উপজেলা সদরের সাথে সংযোগ সড়কগুলো নির্মাণ ও মেরামত কাজ করবে এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর)। গ্রামীন সড়ক ‘এ’ টাইপ ও ‘বি’ টাইপ নির্মাণ ও মেরামত কাজ করবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ )। কিন্তু পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকার কারণে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ সংস্কার না করায় গ্রামীণ মানুষের চলাচলের রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। এ নীতিমালার গ্যাড়াকলে অনেক গ্রামীণ সড়কের সংস্কার কাজে বিলম্ব হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভুষণ পাল সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে জানান, ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরের মধ্যে এ সড়কের সংস্কার শুরু করার প্রসেসিং চলছে।

(এলএস/এএস/অক্টোবর ২৬, ২০১৪)