নেত্রকোণা (কেন্দুয়া) প্রতিনিধি : কাঠ মিস্ত্রি ও মিষ্টি ব্যবসায়ী দুই যুবকের বিরুদ্ধে ১২ মে শুক্রবার কেন্দুয়া থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। র‌্যাব-১৪সিপিসি স্বশস্ত্র এসআই ফকরুল বাদী হয়ে রিপন চন্দ্র বিশ্বশর্মা ও সুব্রত বর্মনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলাটি করেন।

শুক্রবার দুপুরে ওই মামলায় তাদেরকে নেত্রকোণা আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিপন ও সুব্রত বর্মনের বাড়ী কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের সাহিতপুর গ্রামে। তারা সাহিতপুর বাজারেই ব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় এলাকার জনপ্রতিনিধি, সাধারন জনগণ ও পরিবারের সদস্যদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সবাই বলছেন এ ঘটনাটি সাজানো ও ষড়যন্ত্র মূলক। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সুব্রত ও রিপনের মুক্তি দাবি করেন। জানা যায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫ মিনিটের দিকে র‌্যাব- ১৪ সিপিসির একটি দল সান্দিকোনা ইউনিয়নের সাহিতপুর বাজারে আসে। প্রথমে সতিষ চন্দ্র বিশ্বশর্মার ছেলে কাঠ মিস্ত্রি রিপন চন্দ্র বিশ্বশর্মাকে তার দোকান থেকে আটক করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে রিপনের মোবাইল থেকে সুব্রত বর্মনের মোবাইলে কল দিতে বলে। কল পেলে সুব্রত বর্মন তার দোকান থেকে পাশের একটি দোকানের সামনে যাওয়া মাত্রই তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তবে র‌্যাব সদস্যরা মামলায় উল্লেখ করেছেন তাদের কাছে দেশীয় ফাইবগান অস্ত্র পাওয়ার অভিযোগেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুব্রত ও রিপনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। সুব্রত বর্মনের মা মিনা রানী বর্মনের দাবী তার ছেলে সুব্রত বর্মন নির্দোষ। বাড়ির ৩ শতাংশ জায়গা নিয়ে প্রতিবেশী সঞ্জু মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। তার অভিযোগ সঞ্জু মিয়া ষড়যন্ত্র করে তার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

এলাকার বা বাজারের কোন মানুষ তার ছেলে সম্পর্কে খারাপ বলবে না। তিনি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে তার ছেলেকে মুক্তি দেওয়ার দাবী জানান। অপর দিকে সাহিতপুর গ্রামের শামছু মিয়া, রফিক মিয়া, জসিম মিয়া ও চেংজানা গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার তারা মিয়া, হক মিয়া ও সেলিম মিয়ার ভাষা সুব্রত ও রিপন অত্যন্ত নিরীহ। রিপন কাঠ মিস্ত্রির কাজ করে দিন আনে দিন খায়, সুব্রত সাহিতপুর বাজারে মিষ্টির ব্যবসা করে। তারা কারো সঙ্গে কোনদিন ঝগড়া পর্যন্ত করে না। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় আমরা হতবাক হয়েছি। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মুক্তি দাবি করছি।

সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজিজুল ইসলামের ভাষা, ব্যাপারটাই বুঝলামনা। যে দুইজন ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারাতো এরকম কোন অপকর্মের সাথে জড়িত না। তবে কেন এরকম হলো এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি। অপর দিকে সুব্রত বর্মনের প্রতিবেশী সঞ্জু মিয়াকে বাড়িতে এবং সাহিতপুর বাজারে দোকানে গিয়েও পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানা পুলিশের এস.আই শফিউল আলমের ভাষা, সুব্রত বর্মন ও রিপনেরকে এলাকার অনেক লোক দেখতে এসেছে। সবাই তাদেরকে ভালোই বলেছে। আমি তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত করব, তদন্তের সঠিক ফলাফল আদালতে অবহিত করা হবে।

(এসবি/এএস/মে ১২, ২০২৩)