সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় তীব্র লবনাক্তত জমিতে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এই উপজেলায় তীব্র লবনাক্তত জমিতে বাগদা চিংড়ি চাষ হয়ে আসলেও চিড়িংতে রোগবালইসহ ঘনঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে কৃষকরা বোরো ধান চাষে এগিয়ে এসেছে। চলতি মৌসুমে রামপাল উপজেলায় ৪ হাজার ৭০১ হেক্টর জমিতে লবন সহিষ্ণু জাতের উন্নত জাতের বোরো ধানের আবাদ বাম্পার ফলন হয়েছে। 

কৃষি বিভাগ বলছে, এবার রামপালে বোরো ধান থেকে ২০ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টান চাল উৎপাদন হবে। ইতিমধ্যেই কৃষকরা ক্ষেত থেকে তাদের উৎপাদিত বোরো ধান কর্তন শুরু করেছেন।

রামপাল উপজেলার বড়দিয়া গ্রাামের কৃষক মোন্তাজ মোল্লা, সিংগড়বুনিয়া গ্রামের কৃষক বাকিবিল্লাহ ও হুড়কা ইউনিয়নের পার্থ মন্ডল জানান, আমাদের উপকূলীয় এলাকার মাটি ও পানিতে তীব্র লবনাক্ততা থাকে। সেকারনে আমরা জমিতে বাগদা চিংড়ির চাষ করে থাকি। চিড়িংতে রোগবালইসহ ঘনঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে প্রায় প্রতি বছরই আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

এবার উপজেলা কৃষি অফিস লবন সহিষ্ণু জাতের উন্নত জাতের বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহী করার পাশাপাশি সময়মত বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ দিয়ে সহয়তা করায় এবার বাম্পার ফসল পেয়েছি। আমরা বোরো ধান কাটা শুরু করেছি। আশা করি আগামীতেও কৃষি অফিস থেকে আমাদের মতো গরীব কৃষকদের এভাবে সার, বীজ দিলে আমরা কৃষিতে আরো ভালো ফসল ফলাতে পারবো।

রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী মন্ডল জানান, রামপাল হচ্ছে তীব্র লবনাক্ত জলাভূমি এলাকা। এই এলাকালার কৃষকরা ধান চাষের চেয়ে চিংড়ি চাষে বেশি আগ্রহী। গত কয়েক বছর ধরে বাগদা চিড়িংতে রোগবালইসহ ঘনঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় গত কয়েক বছর ধরে কৃষি বিভাগ রামপাল উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কৃষকদের লবন সহিষ্ণু জাতের উন্নত জাতের ধান চাষে আগ্রহী করতে প্রশিক্ষন প্রদর্শনি প্লটের পাশাপাশি সময়মত বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ দিয়ে সহয়তার কাজ শুরু করে। বদলে যেতে থাকে রামপালে ধান উৎপাদনের চিত্র।

গত বছর এই উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। এবার ৪ হাজার ৭০১ হেক্টর জমিতে লবন সহিষ্ণু জাতের উন্নত জাতের বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। জমিতে বাম্পাব ফলন হয়েছে। আমরা ধান কর্তনের পর মেপে দেখেছি এই উপজেলা থেকে এবকার ২০ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টান চাল উৎপাদন হবে। আগামীতে রামপালে লবন সহিষ্ণু জাতের উন্নত জাতের ধান চাষ আরো বাড়বে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

(এস/এসপি/মে ১৫, ২০২৩)