জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মহানগরীতে অবৈধভাবে দাঁপিয়ে বেড়া রিকশা শনাক্ত করতে রিকশার পেছনে এবার বসছে বারকোড। জুলাইতে মাসে এটি বসবে। এটি মূলত সাংকেতিক কালো-সাদা সমান্তরাল রেখা। তবে কখনো কখনো একে মোর্স কোডও বলা হয়ে থাকে। কিন্তু মোর্স কো্ড পুরোপুরিভাবে এর সাথে সামঞ্জস্য রাখে না। বলা যায় বারকোড এর অনুপ্রেরণার পিছনে রয়েছে এই মোর্স কোড। যানজট নিয়ন্ত্রণে অনুমোদনহীন রিকশার দৌরাত্ম্য কমাতে ২০২১ সালে বারকোড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

গত বছরেই বারকোড সংবলিত রিকশার নিবন্ধন ও লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করে সংস্থাটি। কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে ‘লাইসেন্স ফি’ নেওয়ার জটিলতায় আটকে ছিল এ কার্যক্রম। মঙ্গলবার (১৬ মে) সকাল ১১টায় বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হবে চসিকের। এরপরই শুরু হবে কার্যক্রম। একমাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত কাজ শেষ হলে জুলাই থেকে দেওয়া হবে রিকশার বারকোড।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রিকশায় বারকোড বসানোর ফলে বৈধ রিকশা চেনা যেমন সহজ যাবে, তেমনি অবৈধ বাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে ট্রাফিক বিভাগ। চসিক সূত্রে জানা যায়, কেমিস্ট সিজিডি কনসোর্টিয়াম নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বারকোড বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে ১ লাখ ৬ হাজার রিকশার বারকোড তৈরির জন্য কাজ দেয় চসিক। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ৭০ হাজার ১০০টি পুরাতন রিকশার তথ্য সফটওয়ারে আপডেট করেছে। বাকি রিকশাগুলো হবে নতুন লাইসেন্সের।

এদিকে, রিকশার বারকোড নিতে হলে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) ফি ৩০০ টাকা, লাইসেন্স ফি ১০০ টাকা ও আবেদন ফরম বাবদ ৫০ টাকাসহ মোট ৪৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। তারপর পাওয়ার যাবে বারকোড সংবলিত রিকশার লাইসেন্স। যার মেয়াদকাল থাকবে দু’বছর। এরপর প্রতিবছর ১০০ টাকা ফি দিয়ে নবায়ন করতে হবে।

তবে লাইসেন্সের আবেদন ফরম নিতে হবে রিকশার মালিক, চালক দুইজনকেই। একইসঙ্গে রিকশাচালকদেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড দেওয়া হবে। আর এ জন্য বাড়তি গুণতে হবে আরও ৫০ টাকা করে। যদিও প্রথম বছর রিকশাচালকদের জন্য আবেদন ফি ও কার্ড বাবদ ১০০ টাকা নেওয়া হবে। পরে শুধু কার্ডে শুধু ৫০ টাকা নেওয়া হবে। আর এসকল লেনদেন হবে বেসরকারি ব্যাংক ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে।

এ বিষয়ে কেমিস্ট সিজিডি কনসোর্টিয়ামের সহ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের প্রায় সব কাজ শেষ। তবে এর আগে রিকশার লাইসেন্সের জন্য যে রেজিস্টার মেইনটেইন করা হতো সেটা অনুযায়ী যাদের বিগত চার বছরের বেশি বকেয়া আছে তাদের বকেয়াগুলো আমরা সিস্টেমে রাখছি না। তাই এ সংক্রান্ত কিছু কাজ বাকি। যেটার ব্যাংক জমা স্লিপ তৈরি করা হচ্ছে। আর লেনদেনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে। কাল তাদের সঙ্গে একটা মিটিং রয়েছে। আশা করছি তাড়াতাড়ি কাজটা শেষ হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুরাতন রিকশার মধ্যে যাদের বকেয়া রয়েছে, ৩০ জুনের মধ্যে তারা বকেয়া পরিশোধ করলে এরপরই তারা ডিজিটাল নাম্বরপ্লেট অর্থাৎ বারকোড পেয়ে যাবে। আর নতুনদের বারকোড দেওয়া হবে জুলাই থেকে।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (এডিসি) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘নতুন পুরাতন সকল রিকশার বারকোড সংবলিত লাইসেন্স নিতে হবে। এ লাইসেন্সের জন্য সকল ধরনের লেনদেন হবে ‘ওয়ান ব্যাংকের’ মাধ্যমে। কাল তাদের সঙ্গে আমাদের এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।’

(জেজে/এসপি/মে ১৬, ২০২৩)