স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুদ কারবারিসহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত আব্বাস উদ্দিন সদর উপজেলার আব্দালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন। তিনি একই উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের আতর আলী জোয়ার্দারের ছেলে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট) নামে সমবায় সমিতি খুলে গ্রামের সহজ সরল মানুষদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন আব্বাস।

তাঁরা আরও জানান, আব্বাসের শ্বাশুড়ি শাহিদা বেগমের ৩ মেয়ে ও ২ ছেলে। বড় ছেলে নজরুল ইসলাম ও ছোট ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৪০)। আব্বাস তাঁর মেজো মেয়ে মোছা: বিলকিস খাতুনের স্বামী। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় বিয়ের পরপরই ঘরজামাই থাকতেন আব্বাস। সেই সুবাদে নিজের ছেলের দৃষ্টিতে তাকে দেখতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ধীরে ধীরে আব্বাস তার শ্বশুরের বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে হঠাৎ তার শ্বশুর মাওলা বকস অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। টাকার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে সে তাঁর শ্বশুরের নামে থাকা ১০ বিঘা জমি ১২ লাখ টাকায় বন্ধক রাখে কিন্তু শ্বশুরের চিকিৎসার জন্য কোন টাকা ব্যয় না করে তার সমবায় সমিতি ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনে উচ্চমূল্য সুদে সেই টাকা বিনিয়োগ করে। এরই মধ্যে চিকিৎসার অভাবে তার শ্বশুর মাওলা বকস। স্বামী মারা যাওয়ার পর ১০ বিঘা জমি বন্ধক রেখে ১২ লাখ টাকা সুদের কারবারিতে বিনিয়োগের বিষয়টি জানতে পারে শাহিদা বেগম।

আব্বাসের শ্বাশুড়ি শাহিদা বেগম জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে তার ছেলেমেয়েরা কোন খোঁজ খবর নেয়না। অনেক কষ্টে তার দিন চলে। এমনকি বন্ধকের টাকা ফেরত চাইলে তাঁর জামাই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং খুন জখম সহ নানা ধরনের হুমকি-ধমকি প্রদান করে।

এ ঘটনায় নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে আদালতে একটি মামলা ও দায়ের করেছেন বৃদ্ধা শাহিদা।
আব্বাসের শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, আব্বাস তার বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে সুকৌশলে তাকে ফাঁকি দিয়ে তার অন্যান্য ভাই বোনের নামে জমিজমা রেজিষ্ট্রী করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আব্বাস সুদের কারবার করেন। এলাকার অনেক মানুষ ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন।

এ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে আব্বাস উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

(একে/এসপি/মে ১৮, ২০২৩)