কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : যৌতুকের জন্য ঘরের দরজা আটকে এক সন্তানের জননী হামিদা বেগমকে (২২) কে ঘুমন্ত অবস্থায় কাঠের মুগর ও নৌকার তক্তা দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে পাষন্ড স্বামী আলমগীর হোসেন হোসেন মোল্লা। প্রায় দুই ঘন্টা নির্যাতন শেষে তার বুকের উপর উঠে গলায় তক্তা চেপে ধরে তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়।

এ সময় গৃহবধূর আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘরের বেড়া ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে গৃহবধূকে সঙ্গাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামে গত শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে গৃহবধুর ভগ্নিপতি আমির হোসেন তাকে উদ্ধার করে রাতে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর চিকিৎসা সহায়তা কিংবা তাকে দেখতে হাসপাতালেও আসেনি পাষন্ড স্বামী।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হামিদা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাকে যৌতুকের জন্য মারধর করতো স্বামী। ঘটনার দিন রাতে সে শিশু সন্তান মাজিয়া (২) কে নিয়ে ঘরের চৌকিতে ঘুমিয়ে পড়লে রাত নয়টার দিকে স্বামী আলমগীর হোসেন ঘরে ঢুকেই তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানা থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করে। এবং ৫০ হাজার টাকা দিতে না পারলে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে গলায় তক্তা চেপে ধরে।

তার ভাই মহসীন জানান, ২০১০ সালের মার্চ মাসে হামিদার সাথে আলমগীরের বিয়ে হয়। বিয়েতে স্বর্ণালংকারসহ ঘর সাজানোর সকল মালামাল দেয়া হলেও প্রায়ই তাকে মারধর করতো টাকার জন্য। মার্জিয়ার জন্ম হওয়ার পর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়রা সালিশ করলেও সে ক্ষমা চেয়ে প্রতিবারই তাকে ঘরে তুলে নিয়ে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন শুরু করে। এ ব্যাপারে মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।

কলাপাড়া হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, গৃহবধূর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস সেল(ওসিসি)’র প্রোগ্রাম অফিসার মো. আবদুল হাই সিদ্দিকি জানান, তারা নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর সাথে কথা বলে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছে। কোন আইনী সহায়তা চাইলে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।

(এমকেআর/এএস/অক্টোবর ২৬, ২০১৪)