গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা জাকির হোসেন সাদেকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তরের কাজ ভাগিয়ে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আজ ২৫ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডি) সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। নবীনগর উপজেলার বগডহর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা মেহেদী হাসান ওই আবেদন মন্ত্রণালয়ে আজ দুপুরে জমা দেন। মাওলানা মেহেদী হাসান ইসলামী ঐক্যজোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নবীনগর উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সহ সভাপতি।

লিখিত ওই আবেদনে অভিযোগ করা হয়, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ২০১১ সালের উপজেলা পরিষদ আইন লংঘণ করে তাঁর নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসমাম ট্রেডার্সের নামে বিভিন্ন সরকারি টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে আসছে। তিনি (সাদেক) ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ বরাদ্দকরণ, গ্রীণ ভিলেজ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ক্ষমতার জোরে ভাগিয়ে নিয়ে সম্পাদন না করেই সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করছেন। যা উপজেলা পরিষদ আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
এছাড়াও লিখিত ওই আবেদনে জাকির হোসেন সাদেক সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত টি,আর ও কাবিখাসহ জেলা পরিষদের অনেক প্রকল্পের টাকা নামমাত্র কাজ করেই আত্মসাত করেন বলে উল্লেখ করা হয়। আরও বলা হয়েছে, সাদেক তাঁর নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইসমাম ট্রেডার্সের নামে প্রাইমারী স্কুলের পুরাতন ভবন ক্রয় এবং গবাদী পশুর প্রকল্পও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজ ভাগিয়ে নেন। এছাড়া স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মোটা অংকের বিভিন্ন কাজ ও সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কাজ ভাগিয়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন। যা ২০১১ সালের উপজেলা পরিষদ আইনের সুস্পষ্ট লংঘণ।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী মাওলানা মেহেদী হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন,'জাকির হোসেন সাদেক নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে গত চারবছর ধরে উপজেলা পরিষদ আইনের ২১ ধারা লংঘণ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন। যা আইনের সুস্পষ্ট লংঘণ। তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে এসব কাজ করতে পারেন না। তাই তার অপসারণ ও প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি।'

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় লাউর ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সাদেক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'নির্বাচিত হওয়ার দশ বছর আগ থেকেই ঠিকাদারী ব্যবসা করি। আমি কোন ক্ষমতার অপব্যবহার করে টেন্ডারে অংশ নেই না। যথাযথ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডারে অংশ নিয়ে সারা দেশে কাজ করে কষ্ট করে টাকা কামাচ্ছি। আমার কোন কাজেই অস্বচ্ছতা নেই।'

উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ি আপনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে এসব টেন্ডারে অংশ নিতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমিতো নবীনগর উপজেলা পরিষদের কোন কাজে অংশ নেইনা। এলজিইডির বিভিন্ন কাজে বর্তমানে ইটেন্ডারে অংশ নেই। এখন ক্ষমতার অপব্যবহারতো দূরের কথা ইটেন্ডারে অনেক সময় একটি কাজও পাইনা। সবই লস। মূলত সামনে নির্বাচন। তাই আমার ইমেজকে ক্ষুন্ন করতে আমার বিরুদ্বে এসবই ষড়যন্ত্রমূলক।'

এ বিষয়ে জানতে নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলতে বারবার কল দিলেও, তিনি কল রিসিভ করেননি।

(জিডি/এসপি/মে ২৫, ২০২৩)