নীহার রঞ্জন কুন্ডু,  ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ শহরের সরকার অনুমোদিত, দেশীয় বাংলা মদের দোকান থেকে মদ সংগ্রহ করে সেবনের পর ২ জন মারা গেছে, অপর ২ জন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে এদের কারো মদ সেবনের পারমিট আছে কি-না তা কারো কাছ থেকে জানা সম্ভব হয়নি।

নিহত ও আহত পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মে বাংলা মদ সেবনে খ্যাত গালা রফিক প্রতিদিনের ন্যায় যথারিতী রমেশ সেন রোড থেকে মদ সংগ্রহ করে। সংগ্রহ করা মদ নিয়ে রাত আনুমানিক ৯ টায় ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের ২ নং গেইটে আজাহারের দোকানের পাশে বসে সেবন করে। মদ সেবনের কিছুক্ষন পর তারা অসুস্থ হয়ে যান। শুরু হয় বমি। পরদিন আজাহার আর রফিক মারা যান। অপর ২ জন সোহেল ও উজ্জলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের একজনের অবস্থা আশংকাজনক।

ময়মনসিংহ শহরের রমেশ সেন রোডে যৌনপল্লীতে সরকার অনুমোদিত দেশীয় মদের ডিলার রয়েছে। এর গোড়ার দিকে লাইসেন্স এর মালিক ছিলেন আব্দুল কাদের কাদু মিয়া। এর পরে মালিক হন জামিলা খাতুন। পরবর্তী সময়ে এটি আবুল হোসেন ও নুরুল ইসলাম হিরু মিয়া নিয়ে নেন। নুরুল ইসলাম হিরু মিয়ার মৃত্যুর পর এর মালিক হন তার মেয়ে রুপা। মদের এই লাইসেন্স এর মালিকানা পরিবর্তনে সীমাহীন অনিয়ম করা হলেও কৌশলে ধাপেধাপে তারাই মালিক হতে সক্ষম হন। রুপা কখনো মদের দোকানে বসেনা। রির্টান খাতায় যাদের নাম উল্লেখ করে মদ বিক্রী দেখানো হয় তারা অনেক সময় মদ না নিলেও নাম দেখানো হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রমেশ সেন রোডে যৌনপল্লীর অধিকাংশ ঘরেই দেশীয় বাংলা মদ পাওয়া যায়। যৌন পল্লীর নেত্রী লাভলীর নেতৃত্বে মদের ব্যবস্যা করে কমপক্ষে ১৫ জন যৌনকর্মী। তাদের মধ্যে কয়েকজন বয়স্ক রয়েছে। অর্থাৎ এখানে দেশীয় বাংলা মদের রয়েছে সহজ লভ্যতা। মেয়েদের ঘরে পুলিশ অভিযান চালাতে চাইলেই তা মেয়েদের বাধাঁর মুখে পেরে উঠা খুব সহজ নয়। তবুও পুলিশ অভিযান চালিয়ে মদসহ গ্রেফতার করে। মামলাও হয় কিন্তু অভিযোগ গর্ভে লিখা হয় চুলাই মদ! তবুও রুপা ও লাভলীরা ধরাছোয়ার বাইরেই থেকে যায়!

গতকাল স্থানীয় একটি সাপ্তাহিকে সংবাদ প্রকাশ পেলো “যৌনপল্লীতে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলের বররমা বানিজ্য”? যৌনপল্লীর নেত্রী লাভলী ও তার ভারুয়া ওমরের বিরুদ্ধে ফেন্সিডিলের ও ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগ বহুদিনের। এধরনের মাদকের ব্যবসা গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় যৌনপল্লীর গেইটেও হয়। এখানে কমপক্ষে ৪০ জনের মত পতিতাদের দালাল ও মাদক সরবরাহকারী রয়েছে। যৌন পল্লীতে নিঃসন্দেহে খারাপ কাজই হয় কিন্তু মরন ডেকে আনার মত খারাপ কিছু কারো কাম্য নয়।

সুত্র জানায়, নানা কারনে এক সময়কার জৌলসী যৌনপল্লী এখন প্রায় সবটুকু জৌলস হারিয়েছে। যৌন কর্মীর সংখাও কমে গেছে। তবুও এখানে ৩ শতাধিক যৌনকর্মী রয়েছে। যাদের রক্ত চুষে কতিথ নেত্রী আর বেশ ক’জন দাদন ব্যবসায়ী। মূলত যৌন পল্লীর মাদক ব্যবসার শেলটারের মূলে রয়েছে কতিপয় নেত্রীরাই। তাদের কেউ কেউ আবার ইয়াবা ও ফেন্সিডিল নিয়মিত সেবন করে। জৌলসী কক্ষে বসে এরা গভীর রাতে মাদক সেবন করে।

মদ্য সেবনে ২ জনের মৃত্যু, অপর ২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঘটনা পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যপক আলোচনা শুরু হয়েছে। জনগন তা খতিয়ে দেখার দাবী জানিয়েেেছ।

(এনআর/এএস/মে ৩০, ২০২৩)