স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : চাঁদা না দেওয়ায় করা হয়েছে মারপিট। ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়ি-ঘর। ঘরে থাকা সোকেচ ভেঙ্গে লুট করা হয়েছে টাকা। বাদ যায়নি নারী ও শিশু। এলোপাতাড়ী মারধোর করে এক নারীর গলা থেকে স্বর্ণের চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি খুন করে লাশ গুম করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় পুলিশের দারস্থ হন ভুদদক্তভোগীরা। করা হয় মামলা দায়ের। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ২টি মামলা প্রস্তুত করেন। একটিতে পুলিশ বাদী হয়। আরেকটিতে ভুক্তভোগীরা অজ্ঞাতসহ ৪০জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তবে রাত যেতে না যেতেই থানা পুলিশ পাল্টি খায়। উল্টো ভুক্তভোগীদের নামে পুলিশ বাদী হয়ে করেছেন মামলা। আর এর পেছনে সব কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে থানার এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার।

জানা যায়, গত রবিবার রাতে সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু সমর্থিত দামুকদিয়া গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মী চঞ্চল ও উজ্জলের বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন ওই গ্রামের মাতব্বর রাশেদ, পিন্টু, বাবুসহ প্রায় ৩০জন। এসময় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মাতব্বরদের নেতৃত্বে হামলা চালায় ওই গ্রামের বাদশা জোয়াদ্দার,মিজানুর, জীবন, আকা, আশরাফুল জোয়াদ্দার,ফিরোজ জোয়াদ্দার, আরি জোয়াদ্দার, বিদ্যুৎসহ প্রায় ৩০ জন। এ সময় ঘরের টিনের বেড়া ভাংচুর করা হয়। পিটিয়ে আহত করা হয় চঞ্চল, লাকি ও তার মেয়ে মিরাকে।

ঘরে থাকা সোকেচ এর তালা ভেঙ্গে জমি কেনা একলাখ টাকা লুটপাট করা হয় ও হামলায় আহত লাকীর গলা থেকে স্বর্ণের চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরের দিন ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে ৪০ জনের নামে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই সময়ই পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু দিন পেরতেই মামলা ঘুরে গেছে। অভিযোগ উঠেছে শৈলকুপা থানার সেকেন্ড অফিসারের যোগসাজসে ভুক্তভোগীদের নামেই করা হয়েছে মিথ্যা মামলা। ভুক্তভোগী ৯জনসহ ১৭জনের নাম উল্লেখ করে সোমবার এই মামলা করা হয়। এমন ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচারের আশা হারিয়ে ফেলেছেন। পুলিশের এমন পক্ষপাতিত্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে।

হামলার শিকার ভুক্তভোগী চঞ্চল বলেন, চাঁদা না দেওয়ায় হামলার শিকার হয়েছি। নিজেরা মামলা করলাম থানায়। পরে শুনি আমাদের ৯ জনের নামে মামলা হয়েছে। আর এই মামলা সাজিয়েছেন থানার উপ-পরিদর্শক আমিরুজামান ও উপ-পরিদর্শক তকিবুর রহমান। পুলিশের এমন পক্ষপাতিত্যে আমরা ন্যায়বিচার পাবো কি না সন্দেহ আছে।

এ সকল অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি শৈলকুপা থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক আমিরুজ্জামান।

এদিকে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশের কাজে বাঁধাপ্রদান করায় আমরা বাদী হয়ে একটা মামলা করেছি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

(একে/এএস/মে ৩০, ২০২৩)