কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কাছিমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে এসে পাঠদানের পরিবর্তে স্কুল ঝাড়ু দেয়ার কাজ করতে হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রতিদিনই শুধু ছাত্রীদের দিয়ে বিদ্যালয় ঝাড়ু দেয়ার কাজ করাচ্ছে। স্কুল শুরু আগেই তাদের ঝাড়ু দিতে হচ্ছে। এ কারণে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ছাত্রীদের ভবিষৎ চিন্তা করে শিক্ষকদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণীর কক্ষে মারিয়া ও চতুর্থ শ্রেণীর কক্ষে হনুফা ঝাড়ু দিচ্ছে। ধুলায় এ সময় গোটা শ্রেণীতে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা মুখ ঢেকে থাকলেও ধুলোর অশ্রুমুখে তারা ঝাড়ু দিচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্দেশে প্রতিদিনই তাদের ঝাড়ু দিতে হয় বলে তারা জানান। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী লিজা, বিলকিস, রাবেয়া, জেসমিন, তৃতীয় শ্রেনীর নাসিমা,নাফিজা, হালিমা জানায়, তারাও ঝাড়ু দিয়েছে। প্রতিদিন একজন করে মেয়ে ঝাড়ু দিলেও ছেলেদের এ কাজ করতে হয়না।

একাধিক অভিভাবক জানান, তারা সন্তানদের দিয়ে ঘরের কোন কাজ করান না। একটু শারীরিক সমস্যা হলেই চিন্তায় থাকেন। কিন্তু শিক্ষকরা তাদের দিয়ে যা খুশি তা করাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. জলিল স্কুলে উপস্থিত না থাকলেও সহকারী শিক্ষক লতিফ খাঁ জানান, বিদ্যালয় পরিস্কার রাখার জন্য তারা এ কাজ করছে। নিজ ইচ্ছাই তারা ঝাড়ু দিচ্ছে। তারা কাউকে ঝাড়ু দিতে বলেন নি।

বিদ্যালয়ে উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হারুন ফকির জানান, বিদ্যালয়ে পিয়ন না থাকায় তারা এ কাজ করছে। এটাও শিক্ষার একটা অংশ।


কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে কোন ধরনের কাজ না করানো সরকারি নির্দেশ আছে। কোন স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের দিয়ে এ কাজ করালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কলাপাড়া হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, ধুলাবালিতে বিভিন্ন রোগের জীবাণু থাকে। এগুলো পেটে গেলে শিশুদের এলার্জি, চর্মরোগ, পেটের রোগসহ বিভিন্ন রোগা দেখা দিতে পারে। ধুলাবালি পরিস্কার করার আগে অবশ্যই মুখমণ্ডল ঢেকে করা উচিত।

(এমকেআর/এএস/অক্টোবর ২৭, ২০১৪)