কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লতাচাপলী ইউনিয়নের রাখাইন অধ্যুষিত দিয়ারামখোলা গ্রামে প্রায় দুইশ বছরের পুরনো একটি বটগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে রাখাইন সম্প্রদায়ের মধ্যে তোলপাড় চলছে। গত একসপ্তাহ আগে বটগাছটি কাটার কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে গাছটির বিশাল বিশাল ডাল কেটে ফেলা হয়েছে। এ বটগাছের নিচে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের বুদ্ধ পূর্নিমা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে আসছে।

রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজনের বিশ্বাস গাছের নিচে গৌতম বুদ্ধ ধ্যানের মধ্য দিয়ে জ্ঞান লাভ করেছেন বলে রাখাইনদের কাছে গাছটির তাৎপর্য অনেক বেশি। রাখাইন সম্প্রদায়ের দাবি একই এলাকার আজিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আবুল খায়ের আব্দুল আজিজ এ গাছটির ডালপালা কেটে ফেলেছে। তারা গাছটি রক্ষার জন্য লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রবীণ রাখাইন মংলাচিন জানান, ১৭৯০ সালের দিকে এ বটগাছটি লাগানো হয়েছে। পাড়ার প্রতিষ্ঠাকালীন মাদবর সিনিউ রাখাইন বটগাছটি রোপন করেন। দু’শ বছরের বেশি সময়ের স্মৃতি বিজড়িত এ গাছটি তার ডালপালা মেলে প্রায় ১২ শতক জমিতে ছায়া-শীতল পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। কিন্তু তারা মৌখিকভাবে গাছটি কাটতে বাঁধা দিলেও তাদের কথা না শুনে গাছ কাটা অব্যাহত রাখে।

রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজনের অভিযোগ, মাওলানা আবুল খায়ের বৌদ্ধবিহার ঘেষে এক বছর আগে একটি বসতঘর তোলেন। তখন রাখাইন পাড়ার চৌহদ্দির দেয়া পিলার পর্যন্ত ভেঙ্গে ফেলা হয়। তখন এ নিয়ে সালিশ বৈঠকও বসে।

এ ব্যাপারে আবুল খায়ের আব্দুল আজিজ জানান, বটগাছটির ছায়া তার জমিতে পড়ায় মেজো ছেলে তিনটি ডাল কেটে ফেলেছে। প্রায় ১৫ বছর আগে ওই জমি তিনি কিনেছেন।

লতাচাপলী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরসায়েদ ফকির জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়ে গাছের ডাল কাটা বন্ধ করে দিয়েছেন।
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই সঞ্জয় মণ্ডল জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গাছটির কয়েকটি ডাল কাটা হয়েছে। তিনি নিষেধ করে এসেছেন। লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমকেআর/এএস/অক্টোবর ২৭, ২০১৪)