মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চ টাঙ্গাইলে নির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি। রোববার বিকাল চার টায় বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে বাসাইল উপজেলার করাতিপাড়ায় সমাবেশ করার কথা ছিল।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ একই স্থানে শান্তি সমাবেশ আহ্বান করায় গণতন্ত্র মঞ্চের ওই সমাবেশ পন্ড হয়ে যায়। পরে রোড মার্চের বহর শহরের অদূরে সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় সেখানেও ছাত্রলীগ কর্মীরা মহড়া দেয়।

মওলানা ভাসানীর মাজারের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা রোড মার্চ করছি।

সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের বিষয়ে মানুষ যে ঐক্যবদ্ধ সেটা সরকার বুঝতে পারছে। তাই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ভয় পাচ্ছে। নানাভাবে এ সব কর্মসূচিতে বাধার সৃষ্টি করছে।

পরে রোড মার্চ সেখানে না থেমে রবিবার বিকাল সোয়া চার টার দিকে ওই এলাকা অতিক্রম করে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রোড মার্চের বহর টাঙ্গাইল পৌর সভার সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজারে যায়।

সেখানে স্থানীয় নেতাদের সাথে নিয়ে ভাসানীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া করেন। এ সময় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা মাজার এলাকায় অবস্থান নেয়। তারা সেখানে হৈচৈ শুরু করে।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নেতারা মাজার এলাকা থেকে বের হয়ে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে চলে আসেন।জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা একটি রোড মার্চে আছি। আমরা সফরকারী। সফররতভাবে আমরা একটা কর্মসূচির জায়গা ঠিক করেছি। পুলিশের দায়িত্ব আমাদের সেই জায়গা নিরাপত্তা দেয়ার।

কিন্তু আওয়ামী লীগ সেখানে শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করে। সেখানে পুলিশ তাদের সহযোগী ছিল। আমরা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। অন্যত্র তারা স্থান ঠিক করে দিক। পুলিশ সে বিষয়ে কোন সহযোগিতা দেয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিল ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের। সেটা করেছি। সেখানেও দেখেছি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়েছে। নানা দিক থেকে একটা হুমকির পরিস্থিতি তৈরি করে রাখা হয়েছে।

যেহেতু মওলানা ভাসানীর কবর জিয়ারত, দোয়া ও শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়। তাই এর ভাবগাম্ভীর্যতা বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন ছিলাম।১৫টি মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে রোড মার্চে অন্যান্যের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ আহ্বান করলেও তারা করাতিপাড়ায় কোন সমাবেশ করেনি। বিকালে ওই এলাকায় তিন শতাধিক আওয়ামী লীগ কর্মী অবস্থান নেয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চের বহর ওই এলাকা অতিক্রম করার পর তারা সেখান থেকে চলে যান। এ সময় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান গাউস এবং সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিক।

(এসএম/এসপি/জুন ০৫, ২০২৩)