স্টাফ রিপোর্টার : নদী একটি জীবন্ত সত্ত্বা। প্রবহমান হিদাইরখাল নদীতে বাঁধ দেওয়া মানে নদীকে হত্যা করা। যারা এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে নদী হত্যার অভিযোগে বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে গোয়াইনঘাট উপজেলার হিদাইরখাল নদীর উপর অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ অপসারণ ও পরিবেশ বিধ্বংসী সব কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবিতে সিলেটের জৈন্তাপুরের দরবস্তবাজারে গণ-জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সুলতানা কামাল আরও বলেন, একটি প্রাণবন্ত নদীর উৎসমুখে বাঁধ নির্মাণ কেবলমাত্র বেআইনি নয়, এটি একটি অপরাধও। জনগণের করের টাকা দিয়ে নদী হত্যা- কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না। বর্তমান সরকার নদীখেকো ও ধ্বংসকারীদের তালিকা তৈরি করছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দুরে থাক বরং নানাভাবে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। নদীখেকোদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতির কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন। কিন্তু কিছু দুষ্টু লোকের লোভের কারণে তার প্রতিফলন দেখা যায় না ।

তিনি বলেন, নদী ও পরিবেশ ধ্বংসের অপকর্মে যারা লিপ্ত তারা যতোই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ ধ্বংসকারীরা বাংলাদেশের শত্রু। জনগণের শক্র, তারা পৃথিবী এবং মানবজাতিরও শত্রু। যেকোনো নির্বাচনে নদীখেকো ও পরিবেশ ধ্বংসকারী প্রার্থীদের বয়কট করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ ও সারী নদী বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত গণ-জমায়েতে সভাপতিত্ব করেন দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার। আন্দোলনের সভাপতি আবদুল হাই আল হাদীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামাল আহমদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটার কিপার্স তোফাজ্জল সোহেল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের কোষাধ্যক্ষ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফাদার যোসেফ গোমেজ, পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, ঢাকার নটরডেম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মনোজ কুমার সেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফয়জুল্লাহ।

গণজমায়েতের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম। বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক মুজিবুর রহমান ডালিম, চারিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক আলতাফ হোসেন বিলাল ও বাঁধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি শ্রমিক নেতা সেলিম আহমদ প্রমুখ।

(ওএস/এএস/জুন ১০, ২০২৩)