রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যুবলীগনেতা জাহিদুল ইসলাম মঞ্জুর মদ্যপান ও একাধিক নারীর সঙ্গে কাটানো অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একাধিক ছবি ভাইরাল হয়েছে।

গত কয়েকদিন থেকে আপত্তিকর এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।

জাহিদুুল ইসলাম মঞ্জু মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। একই সঙ্গে তিনি ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান। ২৭ মে ওই ইউপির চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান হজে চলে যান। ফলে মঞ্জু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। তিনি বকশীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সদস্যও। একই সঙ্গে তিনি বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলামের বিশ্বস্ত ডানহাত হিসেবে পরিচিত। ফলে নির্বাচনী এলাকা ও বকশীগঞ্জ শহরে তার ব্যাপক আধিপত্য রয়েছে। নানা অপকর্মে জড়িত থাকলেও তার অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস পায় না কেউ। স্ত্রী ও সন্তান রেখে বিভিন্ন সময় তিনি নারী ও মদ নিয়ে ডুবে থাকেন।

গত বৃহস্পতিবার মঞ্জুর মদ্যপান ও নারীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একাধিক ছবি ভাইরাল হয়।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, একটি ঘরের মধ্যে খাটে হলুদ রঙের আবেদনময়ী কাপড়ে এক নারী বসে আছেন। তার হাতে টাকা দিচ্ছেন মঞ্জু। আরেকটি ছবিতে ওই নারী ও মঞ্জু অন্তরঙ্গ অবস্থায় বসে আছেন। আরেকটি ছবিতে ওই নারী দাঁড়িয়ে আছেন আর খাটের ওপর মঞ্জু ও অন্য আরেক নারী কাছাকাছি বসে আছেন। আরেকটি ছবিতে ওই নারী ও মঞ্জু একজন আরেকজনের দিকে আবেদনময়ী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। আরেকটি ছবিতে কোনো একটি ডেকোরেটরের দোকানে টেবিলের উপর বিদেশি একটি মদের বোতল রেখে মঞ্জু মদ্যপান করছেন।

বকশীগঞ্জে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, এলাকায় ব্যাপক আধিপত্য রয়েছে মঞ্জুর। এই আধিপত্যকে কাজে লাগিয়ে তিনি এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালান। নারী ও মদ নিয়ে ফুর্তি তার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তার ওয়ার্ডের সরকারি বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেন। অভিযোগ রয়েছে, তার এসব অপকর্মের শেল্টার দেন বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর। তাদের এসব অপকর্মে বকশীগঞ্জের বিশিষ্টজনরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

তাঁদের অনেকেই বলেছেন, কে শেল্টার দিলো সেটা বিষয় নয়, তার এসব অপকর্মে দ্রুত শাস্তি হওয়া দরকার।

এসব বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘আমার কয়েকজন বন্ধু সেখানে জোর করে নিয়ে যান। ওই মেয়ে একটু সমস্যায় পড়ছিল, তাই টাকা দিয়েছি।’

ওই নারীসহ দুজন নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ও মদ্যপানের ছবির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ভাই, ফোনে সব কথা বলা যাবে না। সাক্ষাতে বিস্তারিত বলতে পারবো।' এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানার জন্যে বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

(আরআর/এসপি/জুন ১১, ২০২৩)