আবু নাসের হুসাইন, সালথা : পেঁয়াজের রাজধানী ফরিদপুরের সালথায় প্রতিকেজি পেঁয়াজের মুল্যে গড়ে ৫৫ টাকা পাচ্ছে কৃষক। এরআগে হু-হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। কয়েকদিন ৮০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয় প্রতিকেজি পেঁয়াজ। তখন কৃষকদের সংশয় ছিলো এই পেঁয়াজের দাম নিয়ে। দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার পর গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৫৩ টাকা থেকে ৫৬ টাকা দরে। পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হবে কিনা, এনিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা।

এবছর এই উপজেলায় মোট পেঁয়াজ উৎপাদণ হয় ১লাখ ৪৮ হাজার মেঃটন। মোট পেঁয়াজ উৎপাদণের ৩০ থেকে ৩৫% পেঁয়াজ বর্তমানে কৃষকের কাছে আছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে।

বুধবার উপজেলার ঠেনঠেনিয়া ও নকুলহাটি পেঁয়াজের হাটে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা ভ্যানে করে সকাল সকাল পেয়াজ নিয়ে হাটে আসছেন বিক্রি করার জন্য। হাটে প্রতিমণ (৪০ কেজিতে একমণ) পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ২২শ টাকা থেকে ২৩শ টাকা দরে। এসময় পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা কৃষকরা জানান, এক কেজি পেঁয়াজ উৎপাদণে সৃজনের সময় কৃষকের খরচ হয় গড়ে ৩৫ টাকা। ঘরে রাখলে পেঁয়াজের ঘাটতিসহ বর্তমান খরচ দাড়ায় প্রতিকেজি ৪৫টাকা থেকে ৪৮ টাকা। তাতে ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা দাম পেলে কৃষকের কিছুটা লাভ হয়। গত কয়েক বছরধরে পেঁয়াজ চাষ করে লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। এবছরে পেঁয়াজে লাভ না হলে আগামীতে পেঁয়াজ আবাদ কমে যেতে পারে বলে ইকরাম, সাইফুল ও আসলাম নামে কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন। সেই সাথে পেঁয়াজের বাজারমুল্যে স্থিতিশীল করার দাবীও জানান তারা।

এদিকে তৈয়াব আলী, সুজন মিয়া ও হক মোল্যা নামের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানী করার পর থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতিমণ পেঁয়াজ ২২শ টাকা থেকে ২৪শ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। বাজারের দাম অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন আড়ৎগুলোতে সীমিত লাভে পেয়াজ দেওয়া হয়ে থাকে। আবার বাজার উঠা-নামা করার কারণে কয়েকটি পেঁয়াজের চালানে ব্যবসায়ীদের লোকসান হয়েছে। বাজার স্থিতিশীল হলে কৃষক, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য ভালো হতো।

উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন শিকদার বলেন, দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে পেঁয়াজের মুল্যে স্থিতিশীল হবে এবং বাজারে পেয়াজের মুল্যে কৃষকের পক্ষেই থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এবিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার কাজ করছে। ভোক্তা ও উৎপাদনকারীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তৃতীয় পক্ষ যেন লাভবান না হয় সে বিষয়ে নিয়মিত স্থানীয় বাজারগুলোতে মনিটরিং চলবে।

(এএন/এসপি/জুন ১৪, ২০২৩)