জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে বদলির বিনিময়ে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে গ্রেফতার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদরকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এর মধ্যে তাকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ১ বছর ৬ মাস কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ মাস সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদ এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আজিমেল কদর ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন দক্ষিণ জয়পাড়া গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে। তিনি ঘটনার সময় ফটিকছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন।

দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, তাসলিমা আক্তার নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে বদলির বিনিময়ে ঘুস নিতে গিয়ে দুদকের জালে ধরা পড়েন আজিমেল কদর।

এদিন রায় ঘোষণার সময় আসামি আজিমেল আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর আসামি উচ্চ আদালতে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সাজা পরোয়ানামূলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, মামলার অভিযোগকারী সহকারী শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তার ২০১৯ সালে ফটিকছড়ির উত্তর পাইন্দং বেড়াজালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। স্কুলটি দুর্গম এলাকায় হওয়ায় যাতায়াতে তার বেশ কষ্ট হতো। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি গ্রামের কাছাকাছি স্কুলে বদলির জন্য অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে তদবির করেন। একপর্যায়ে বদলির জন্য তার কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর। সহকারী শিক্ষিকা তাসলিমা নিরুপায় হয়ে ওই বছরের ২০ মার্চ বিবাদীকে পাঁচ হাজার টাকা দেন। পরবর্তী সময়ে তাকে আরও ১০ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়ে দফারফা হয়। ওই টাকা না দিলে বদলি কার্যকর হবে না বলে জানানো হয়।

এ ঘটনায় দুদকে অভিযোগ করেন তাসলিমা। তার অভিযোগের সূত্র ধরে ফাঁদ মামলার অনুমোদন দেয় দুদক। একই বছরের ২৮ মার্চ ফটিকছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদক। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগেই ২০টি ৫০০ টাকার নোটে সই করে দেন দুদক কর্মকর্তারা। পরে তাসলিমা ওই টাকা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিলে দুদক টিম সেখানে হাজির হয়ে আজিমেলকে হাতেনাতে আটক করে। এসময় তার পকেট থেকে ঘুসের নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ মামলা দায়ের করেন সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম। পরবর্তীকালে ওই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। বিচারকাজ চলাচালে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

(জেজে/এসপি/জুন ১৬, ২০২৩)