বিশেষ প্রতিনিধি, মাদারীপুর : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের বৌলগ্রামে গৃহবধূ জাহেদা বেগমের (৩৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ( ১৫ জুন) রাত ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নেশার টাকার জন্য স্ত্রী জাহেদা বেগমকে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সাথে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় নেশাখোর স্বামী রুহুল আমিনকে (৪০) পুলিশ আটক করেছে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বৌলগ্রামের নুরু শেখের ছেলে অটোবাইক চালক রুহুল আমিন নেশা করেন। এছাড়াও সে জুয়া খেলে। এতে সে বেশ কিছু টাকা অন্যের কাছ থেকে ধার করেন। সেই টাকার জন্য প্রায়ই রুহুল আমিন তার প্রবাসী স্ত্রী জাহেদা বেগমকে মারধর করতো। এরই জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহেদার সাথে স্বামী রুহুল আমিনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় স্বামী রুহুল আমিন স্ত্রী জাহেদাকে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন নেশাখোর স্বামী রুহুল আমিন। জাহেদা এক মাসের এক ছেলে সন্তানসহ তিন সন্তানের মা ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ওমান ছিলেন।

নিহতের বড় ভাই মো. হক শেখ ও বোন মেহেলা বেগম জানান, আমার বোন জাহেদা বিদেশ থাকতো। আমাদের বোন জামাই নেশাখো ছিলেন। জুয়াও খেলতেন। ঠিকমতো আয়রোজগার করতেন না। রুহুল আমিন জানতো তার স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা আছে। সেই টাকার জন্য প্রায় আমার বোনকে মারধর করতো। আমার বোন জামাই রুহুল আমিন আমার বোনকে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেছেন। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

নিহতের মেয়ে রিয়া আক্তার (১৪) জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে আমি ঔষধ কিনতে বাজারে যাই। এসে দেখি আমার মা ফ্যানের সাথে ঝুলে আছেন। তবে আমার মা বিদেশ থাকতেন। বাবার সন্দেহ আমার মার কাছে ১০ লাখ টাকা আছে। এনিয়ে গত তিন দিন আগে আমার মার সাথে বাবার ঝগড়া হয়।

অভিযুক্ত স্বামী রুহুল আমিন বলেন, আমার স্ত্রী জাহেদা আত্মহত্যা করেছে। আমি তাকে হত্যা করেনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। রিপোর্ট পেলে জানা যাবে আত্মহত্যা নাকি হত্যা। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী রুহুল আমিনকে আটক করা হয়েছে।

(এএসএ/এসপি/জুন ১৬, ২০২৩)