শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি জলাশয়ে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। শ্রীনগর-দোহার আঞ্চলিক সড়কের শ্রীনগর বাইপাস জুশুরগাঁও মিল্কভিটার পশ্চিমদিকের সড়কের দক্ষিণ পাশে সরকারি জলাধার রাতের আঁধারে ভরাট করা হচ্ছে। উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী রমিজউদ্দিন বেপারীর ছত্র ছাঁয়ায় তার জামাতা যুবলীগ নেতা মো. সোহেলের নেতৃত্বে জায়গাটি ভরাটের কর্মযজ্ঞ চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে জেলা পরিষদের জায়গাসহ জলাশয় ভরাটে ড্রাম ট্রাক দিয়ে দূর থেকে বালু এনে ফেলা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বছর খানেক আগেও জায়গাটি ভরাটের জন্য সোহেল চেষ্টা করেছিল। রমিজগং জলাধারটি ফের ভরাট কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে রমিজউদ্দিন বেপারীগং মিল্কভিটা সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে গণপূর্তের জায়গা ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে ভূমি সিন্ডিকেটটি বাংলাদেশ সরকার পক্ষের গণপূর্ত নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ওই জায়গা ভরাট করে। এনিয়ে চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ভরাটকৃত জায়গার সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রভাবশালী মহলটির সামনে কোন বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেনি। মহলটি গণপূর্তের ওই জায়গায় এখন পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। অথচ সংবাদ প্রকাশের পর গণপূর্ত বিভাগীয় পি ডব্লিউ ডি (সাব-ডিভিশন) মুন্সীগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান হিরা সরেজমিনে এসে জায়গাটির পরিমাপ করে ভরাটকৃত জায়গার মাটি অপসারণের জন্য বলে যান। এতেও কোন ফল দেখতে পায়নি জনসাধারণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুশুরীপাড়া মৌজায় ২নং খতিয়ানের আরএস ১৪টি দাগে মোট সম্পত্তির পরিমান ১২ একর ২৫ শতাংশ। রেকর্ড অনুযায়ী এসব সম্পত্তির মালিক গণপূর্ত নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। এসব জায়গার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। ভূমি সিন্ডিকেটটি এখন মিল্কভিটার পশ্চিম পাশে জেলা পরিষদের জায়গাটি ভরাট শুরু করায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

মো. সোহেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যা কিছুই করা হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েই করা হচ্ছে। জায়গা ভরাটের কোন ছাড়পত্র আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা না বলে এড়িয়ে যান। হাজী রমিজউদ্দিন বেপারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবী করেন জেলা পরিষদ থেকে তারা লীজ এনেছেন। লীজকৃত জায়গা মাটি ভরাট করা লীজ শর্তের মধ্যে পড়ে কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যান।

মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. ঈসমাইল হোসেন এ ব্যপারে জানান, লীজকৃত জায়গা ভরাটের জন্য অনুমতির দেওয়া হয়নি। পাকা স্থাপনা নির্মাণের তো প্রশ্নই আসেনা। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

(এমএ/এএস/জুন ১৭, ২০২৩)