রাজন্য রুহানি, জামালপুর : ৭১ টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ও বাংলানিউজের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২২ জনের নামোল্লেখ করে স্থানীয় থানায় মামলা করেছেন সাংবাদিকের স্ত্রী মনিরা বেগম। এছাড়া আরও ২০/২৫ জনকে ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় বকশীগঞ্জ থানায় এ হত্যা মামলার দায়ের হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মামলার দ্বিতীয় আসামি হলেন ওই চেয়ারম্যানের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাহিম ফয়সাল রিফাত ও তৃতীয় আসামি করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রাকিবুল্লাহ রাকিব।

এছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- বকশীগঞ্জ উত্তর বাজার এলাকার আনার আলীর ছেলে গোলাম কিবরিয়া সুমন ও ফরহাদ হোসেন ফক্কার ছেলে মো. খন্দকার শামীম, কামালেরবার্তী গ্রামের জমির শেখের ছেলে রেজাউল করিম ও মফিজল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনিরুল, আর্চাকান্দি গ্রামের গাজী আমর আলী, কাগমারীপাড়া গ্রামের শাফিজল হকের ছেলে মোহাম্মদ শরীফ মিয়া, পশ্চিম নামাপাড়া গ্রামের খোরশেদ মণ্ডলের ছেলে ইসমাইল হোসেন স্বপন মণ্ডল, মালিরচর নয়াপাড়ার মিলন মিয়া, একই এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে লিপন মিয়া, বকশীগঞ্জ নামাপাড়ার শেখ ফরিদ, টাঙ্গারীপাড়ার কামালের ছেলে ওমর ফারুক, বটতলী সাধুরপাড়ার আবুল কালামের ছেলে রুবেল মিয়া, খেতারচর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জহুরুল হকের ছেলে সুরুজ মিয়া, শান্তিনগর গ্রামের আ. জলিলের ছেলে বাদশা মিয়া, মদনেরচর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ, আর্চাকান্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ইমান আলী, দক্ষিণ ধাতুয়াকান্দা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে সোলাইমান হক, কুতুবেরচর গ্রামের রফিকুল ইসলাম (সাবেক মেম্বার) ও সূর্যনগর গ্রামের কারিমুল মাস্টারের ছেলে আমানুল্লাহ।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যেই চেয়ারম্যান বাবুসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৯ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাদের প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। আদালত রবিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তাঁর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাহিম ফয়সাল রিফাতকেও বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ।

প্রসঙ্গত, বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃত্বে তার ছেলেসহ একদল সন্ত্রাসী সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলা করা হয়। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। রাত দেড়টার দিকে তাঁকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য মমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে মারা যান নাদিম।

(আরআর/এএস/জুন ১৭, ২০২৩)