ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


মঙ্গলবার (২০ জুন) বিশ্ব শরণার্থী দিবস ২০২৩। প্রতি বছর এ দিনে বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের অমানবিক অবস্থানের প্রতি আন্তর্জাতিক নেতাদের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে শরণার্থী দিবস। 

যুদ্ধ, সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, চরমপন্থা, দারিদ্র্য , দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খাদ্য সংকট; প্রভৃতি ইস্যুতে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন শরণার্থীর সংখ্যাও বেড়েই চলছে। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এ সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দিয়েছে।

আর এমন বিরূপ পরিবেশেই বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০০১ সাল থেকে শরণার্থীদের অধিকার রক্ষায় ইউএনএইচসিআর প্রতি বছর ২০ জুন দিবসটি পালন করে থাকে।

বাংলাদেশে ২০১৭ সালের আগে অন্তত চার লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সেনাচৌকিতে জঙ্গি হামলাকে অজুহাত দেখিয়ে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর নিজের চোখে দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজার যান। তাদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তাৎক্ষণিকভাবে তাদের জন্য খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেন।

আগ্রহী বিদেশি সাহায্য সংস্থাগুলোকেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করার সুযোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই তাৎক্ষণিক মানবিক সিদ্ধান্ত পুরো বিশ্বের নজর কাড়ে এবং বিপুল প্রশংসিত হয়। তবে এখানেই থেমে থাকেননি প্রধানমন্ত্রী।

২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিনি পাঁচ দফা প্রস্তাবও করেন। তার এই প্রস্তাবনাগুলো ছিল অনতিবিলম্বে ও চিরতরে মিয়ানমারের সহিংসতা এবং জাতিগত নিধন নিঃশর্তে বন্ধ করা, দ্রুত মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিজস্ব অনুসন্ধানী দল পাঠানো, জাতি-ধর্মনির্বিশেষে সব নাগরিকের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে মিয়ানমারের ভেতর জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষাবলয় গড়ে তোলা, রাখাইন রাজ্য থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেয়া সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজেদের বাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তাবায়ন নিশ্চিত করা।

এরপর মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুর ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর নিন্দা প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘ। তবে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করেই বসে থাকেনি বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে থাকে।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নমূলক আচরণ বন্ধে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর গাম্বিয়ার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) ২৩ জানুয়ারি ২০২০ সালে একটি জরুরি ‘সামরিক পদক্ষেপ’ ঘোষণা দেয়। সব মিলিয়ে গত চার বছর ধরে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সফলতার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এরপর থেকে পরের কয়েক মাসে বাংলাদেশে এসেছে আরও সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ লাখ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছে বাংলাদেশে। এদের মধ্যে ভাষানচরে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে সরকার। যেখানে তারা উন্নত সুবিধা পাচ্ছে।বর্তমানে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিয়ে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। কয়েক দফা উদ্যোগের পরও একজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি। নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার নিশ্চয়তা নিয়ে তারা আদৌ নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে পারবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রোহিঙ্গারা।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে এখন প্রতি ৭৭ জনের একজন শরণার্থী। গত এক দশক ধরে প্রতি বছর শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২১ সালের শেষে বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৯ কোটি ৯৩ লাখে।গত ১৪ জুন ২০২৩। ইউএনএইচসিআর বা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বে বর্তমানে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। গত বছরের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৪৮ লাখ। ২০২১ সালের তুলনায় এটা প্রায় ১ কোটি ৯১ লাখ বেশি। আর বর্তমানের সেটা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ কোটি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০২২ সালেই প্রায় ৩ কোটি ৫৩ লাখ লোক নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পালিয়েছে। এক বছরের মধ্যেই প্রায় সাড়ে ৩ কোটি লোক নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, এটা যে কোনো বিচারেই আতঙ্কের বিষয়। এছাড়া প্রায় ৬ কোটি ২৫ লাখ লোক নিজ দেশেই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধান বলছেন, ‘এ ক্রমবর্ধমান সংখ্যা আশঙ্কাজনক এবং নিন্দনীয়।’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বে কেন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এভাবে বাড়ছে? পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এমন কী পরিস্থিতি বিরাজ করছে যে, মানুষ নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পালাতে বাধ্য হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর জানাটা জরুরি।জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, যখন কোনো মানুষ বা জনগোষ্ঠী নির্যাতন, সংঘাত, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ক্রমবর্ধমান নৈরাজ্য (ডিস্ট্রার্বিং পাবলিক অর্ডার) এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় গ্রহণ করে, তখন তাকে ‘ফোর্স ডিসপ্লোজড’ বা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বলা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা কমানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্ব নানাভাবে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা যাতে না বৃদ্ধি পায় সে জন্য নানা ধরনের আইন-কানুন প্রণয়ন করেছে- যাকে বলা হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক’ অথবা ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রটেকশন রেজিম’।

যেমন- ১৯৫১ সালের আন্তর্জাতিক রিফিউজি কনভেনশন, ১৯৬৭ সালের রিফিউজি প্রটোকল, ১৯৫৪ সালের কনভেনশন রিলেটিং টু দ্য স্ট্যাটাস অব স্টেটলেস পিপল, ১৯৬১ সালের কনভেনশন অন দ্য রিডাকশন অব স্টেটলেসনেস, ১৯৬৭ সালের ডিকলারেশন অব টেরিটরিয়াল এসাইলাম এবং ১৯৯৫ সালের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন দ্য এলিমিনেশন অব অল ফর্মস অব রেসিয়াল ডিসক্রিমিনেশন প্রভৃতি।

এছাড়া ইউরোপ, আফ্রিকা, আরব দেশ এবং এশিয়ার দেশগুলোয় শরণার্থী ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না হয়, তার জন্য নানা আইনি সুরক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার সনদের (যা ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৪৮ সালে) ৭৫ বছর পরও পৃথিবী দেশে দেশে শরণার্থীর সংখ্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা, আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা এবং রাষ্ট্রহীন মানুষের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্যানুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীতে শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি। ভিন্ন দেশের আশ্রয়প্রার্থীর (এসাইলাম শিকার) সংখ্যা প্রায় ৫৪ লাখ। অন্তত এক কোটি লোক বর্তমান বিশ্বে রাষ্ট্রবিহীন মানুষ হিসেবে পরিচিত। তার সঙ্গে যুক্ত আছে ১১ কোটি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং ৬ কোটি ২৫ লাখ নিজ দেশে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ।

পরিসংখ্যান দেখেই উপলব্ধি করা যায়, পৃথিবীতে শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত, রাষ্ট্রবিহীন মানুষ এবং অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সংখ্যার এ ক্রমবর্ধমান প্রবণতার দায়-দায়িত্ব জাতিসংঘসহ বিশ্ববাসীকে অবশ্যই নিতে হবে।জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা কেন বর্তমানে ১১ কোটিতে গিয়ে পৌঁছেছে, তার কারণ হিসেবে গত ১৪ জুন প্রকাশিত জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সংঘাত, নিপীড়ন, দ্বন্দ্ব ও বৈষম্যের কারণে মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।’

অভিবাসী, আশ্রয়প্রার্থী, শরণার্থী: পার্থক্য কী?

ইউরোপে সাম্প্রতিক অভিবাসন সমস্যার খবর পরিবেশনে সংবাদমাধ্যমে তিনটি শব্দ অভিবাসী, শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থী—প্রায় একই অর্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু এগুলোর প্রতিটিই আলাদা অর্থ প্রকাশ করে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও পরিণতি বিবেচনায়ও শব্দগুলোর প্রয়োগ ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে ওই তিন শব্দের সাধারণ অর্থ ও ব্যবধান তুলে ধরেছে:

অভিবাসী: কেউ বসবাসের উদ্দেশ্যে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে এক বছরের বেশি সময় থাকলে তাঁকে সাধারণ অর্থে অভিবাসী বলা যায়। মানুষ বিভিন্ন কারণে অভিবাসী হতে পারে। কাজ বা উন্নততর জীবনযাপনের খোঁজে যাঁরা দেশ ছাড়েন, তাঁদের অর্থনৈতিক অভিবাসী বলা হয়। পড়াশোনার উদ্দেশ্য বা পারিবারিক কারণেও অনেকে অভিবাসী হয়। নিজ দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে বা পরিবারের সদস্যদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও মানুষ অভিবাসনের পথ বেছে নেয়।

শরণার্থী: সশস্ত্র লড়াই বা নিপীড়ন থেকে বাঁচতে যদি কেউ দেশ থেকে পালিয়ে যান এবং দেশে ফিরে গেলে তাঁর জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি থাকায় তাঁকে আন্তর্জাতিক সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে স্বীকৃতি থাকে, তাঁকে শরণার্থী বলা যেতে পারে। ১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদ অনুযায়ী তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হয়। ওই সনদের মূলনীতি হলো, শরণার্থীদের তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না অথবা সেই পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে বাধ্য করা যাবে না যেখানে তাদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখোমুখি হবে। কেউ শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর তাঁকে সামাজিক আবাসন ও কল্যাণমূলক সুবিধাগুলো দিতে হবে এবং কাজের ব্যবস্থা ও সমাজে মিশে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে হবে।

আশ্রয়প্রার্থী: কেউ কোনো দেশে গিয়ে আশ্রয় চাইলে তাঁর দাবি বিবেচনা করার এবং তাঁকে অবিলম্বে নিজ দেশে ফেরত না পাঠানোর জন্য কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শরণার্থী সনদে বলা হয়েছে, কেউ শরণার্থী হলে আশ্রয়ের আবেদন করার জন্য তাঁকে সুযোগ দিতে হবে এবং ওই আবেদন-প্রক্রিয়া চলাকালীন তাঁর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২০০১ সালের ২০ জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস হিসেবে পালনের বিষয়টি পাস হয়।

১৯৫১ সালে অনুষ্ঠিত শরণার্থীদের অবস্থান নির্ণয় বিষয়ক একটি কনভেনশনের ৫০ বছর পূর্তি হয় ২০০১ সালে।

২০০০ সাল পর্যন্ত আফ্রিকান শরণার্থী দিবস নামে একটি দিবস বিভিন্ন দেশে পালিত হয়ে আসছিল। জাতিসংঘ পরবর্তীকালে ২০ জুনকে আফ্রিকান শরণার্থী দিবসের পরিবর্তে আন্তর্জাতিকভাবে শরণার্থী দিবস হিসেবে পালন করতে সম্মত হয়েছে। পরিশেষে বলতে চাই,, বিশ্বের কোটি মানুষের আশায় আজ ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবসে বিশ্ববিবেক আবারও নতুন করে শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় সোচ্চার হবে। তাই বিশ্ব শরণার্থী দিবসে উদ্বাস্তুদের সমর্থনে বিশ্বের অনেক দেশে বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করা হয়। এই ইভেন্টগুলিতে শরণার্থী ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, হোস্ট সম্প্রদায়, বহুজাতিক সংস্থা, সেলিব্রিটি, স্কুলের শিশু এবং সাধারণ জনগণও অংশ নেয়। এই সব ইভেন্ট শরণার্থীদের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করে যাতে তাদের প্রতি বিশ্ববাসী সহানুভূতিশীল হয়। মানুষ হিসেবে তাদের বেঁচে থাকার অধিকার, মৌলিক মানবিক চাহিদা পাওয়ার অধিকার ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।