কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : বোয়ালমারীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আল-হাসান মহিলা মাদরাসা তার তিন কৃতি শিক্ষিকার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

আজ সোমবার সকাল ১০টায় এ মহতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম,এম,মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন, সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো রকিবুল হাসান, চন্দনা সম্পাদক কাজী হাসান ফিরোজ ও বোয়ালমারী বার্তা সম্পাদক এ্যাড.মো. কোরবন আলী।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান এম,এ, কুদ্দুস স্বাগত বক্তব্যে বলেন, অত্র প্রতিষ্ঠানের মুশতারী পারভীন ও ফেরদৌসী বেগম শিক্ষকতায় উচ্চতর অবস্থানে পদন্নোতি জনিত কারণে বিদায় এবং ২০২৩ এর একুশে বই মেলায় শিক্ষিকা তহমিনা খানম এর বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শিরোনামের গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়া সহ তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।

প্রধান অতিথি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। তিনি মাদরাসার ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখনি। তোমরা বই পড়ে যুদ্ধ কালীন ভয়াবহতার কিছু ধারণা পাবে। তোমরা আমার হাতের দিকে তাকিয়ে যে দুটো দাগ দেখতে পাচ্ছ, এটা একাত্তরের বর্বরোচিত আচরণের সামান্য চিত্র। ওরা আমার উপর অত্যাচার পৈচাশিক অত্যাচার চালিয়ে মৃত ভেবে মাদারীপুরের টেকেরহাটে ফেলে রেখে যায়। তিনি তহমিনা খানমকে তাঁর লেখা অব্যহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি তহমিনা খানমের সফলতা কামনা করেন।

প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের প্রতি মোবাইলকে না বলার আহ্বান জানান। তিনি তাদের প্রতি সিলেবাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বহিঃজগতের জ্ঞান অর্জনের জন্যে জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং বিভিন্ন লেখকের বই পড়ার আহ্বান জানান। প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একটা উদাহরণ তুলে ধরে বলেন,বোয়ালমারীর একজন ছাত্রী প্রথম শ্রেণি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত সর্বোচ্চ ফলাফল নিয়েও দেশের কোন মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি।

তিনি ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তহমিনা খানমের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বইটি পাঠ করলে যে কোন ভর্তি এবং প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে। করণ বর্তমানে যে কোন পরীক্ষায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রশ্ন থাকে।

তিনি ছাত্রীদের প্রতি বাল্য বিয়েকে ন বলার আহ্বান জানান। তিনি মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করেননা। তিনি জরুরি প্রয়োজনে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের মোবাইল ফোন ব্যবহারের পরামর্শ দেন। প্রধান অতিথি বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের এখন আর কেউ অবজ্ঞা করেনা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি এবং চূড়ান্ত পরীক্ষায় মাদরাসা ছাত্রদের রেজাল্ট ভালো।

তিনি মাদরাসার ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বোয়ালমারী পাবলিক লাইব্রেরিতে হাজার হাজার বই আছে। তোমরা ওখান থেকে বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারো। তোমরাই আগামী দিনে এদেশের বড় বড় পদ অলংকৃত করবে।

প্রধান অতিথি স্বাধীনতার স্বপ্ন দ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মাহুতি দেয়া ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লাখ সম্ভ্রম হারানো মায়েদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

(কেএফ/এসপি/জুন ১৯, ২০২৩)