প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম : ২ জুলাই (রবিবার) কুড়িগ্রামে রাজারহাটে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আর্সেনিক গবেষক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শিবতোষ রায়ের ২২তম মৃত্যু বার্ষিকী। তিনি ১৯৫০ সালের ২০ ফেব্রয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বৈদ্যের বাজার গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা স্বর্গীয় পঞ্চানন্দ রায়, মাতা স্বর্গীয় নির্মলা রায়, স্ত্রী সাবিত্রী রায় এবং কন্যা ডাঃ সেঁজুতি রায় ও ড. শ্রীবন্তী রায়। ডাঃ শিবতোষ রায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারী পাশ করার পর সরকারি থানা হাসপাতালে টিএইচও পদে যোগদান করেন। 

ওই সময়ে দুর্ভিক্ষ পীড়িত অনাহার ক্লিষ্ট শিশুদের সেবা করার লক্ষ্যে টিএইচও পদ ছেড়ে কুড়িগ্রাম জেলার বেসরকারি সংস্হা টেরিডেস হোমস্ এ যোগদেন। পরবর্তীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ইরান এ দীর্ঘদিন থেকে দেশে ফিরে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে যোগদান করেন।

কমিউনিটি হাসপাতালে কাজ করার সময় পাবনা রূপপুর স্বাস্হ্য ক্যাম্পে কিছু চর্ম রোগী দেখে সন্দেহ নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠান পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হন সকলে আর্সেনিক রোগী। এর পর দেশের ৬১ জেলার নলকূপের পানির নমুনা সংগ্রহ করে ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পাঠান পরীক্ষা শেষে জানা যায় মানব দেহের সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আর্সেনিকের উপস্হিতি। পরে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ও ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ ভাবে দেশের ৬১ জেলার ৫০০০ গ্রামে কয়েক লক্ষ্য আর্সেনিক রোগী সনাক্ত করেন।

পরর্বতীতে কলকাতা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (এস ও-ই এস)পরিচালক ড. দীপঙ্কর চক্রবর্তী, ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান স্যার ও ডাঃশিবতোষ রায় পৃথিবীর ৩৩ দেশে আর্সেনিক গবেষণা মূলক সেমিনারে অংশগ্রহণ করে ডাঃ রায় তার লেখা "আর্সেনিক দূষণ ও তার প্রতিকার " প্রবন্ধ প্রকাশ ও পাঠ করে খ্যাতি লাভ করেন।

ডাঃ শিবতোষ রায় WHO এর বিরুদ্ধে মামলা করে জয়লাভ করে এর ফলে এখন যে সকল নলকূপ বসান হচ্ছে অনেক গভীরে করে। ২০০১ইং সালের ২জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সমন্বয়ে গঠিত টিমকে নিয়ে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে ভূ-গর্ভস্থ পানিতে ও খাদ্যদ্রবে আর্সেনিক নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর ফেরার পথে তারাগঞ্জ নামক স্হানে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাস ঘাতক ট্রাক এর চাপায় ডাঃ রায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.মুস্তাক আহমেদ ঘটনা স্থলে মৃত্যু বরণ করেন।

(পিএস/এসপি/জুলাই ০২, ২০২৩)