কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৭৫ টাকা কমিয়ে ৯৯৯ টাকা নির্ধারণ করার পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী বাজারে বসুন্ধরা কোম্পানির গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে খোদ বসুন্ধরা কোম্পানিই গ্যাসের সিলিন্ডার সরবরাহ করছে না  বলে জানান স্থানীয় ডিলার।

সূত্র জানায়, শহরের অধিকাংশ গ্যাসের দোকানেই মিলছে না বসুন্ধরা কোম্পানির গ্যাসের সিলিন্ডার। দুই-এক দোকানে মিললেও খুচরা বাজারে আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে এলপিজি। সিলিন্ডার গ্যাসের দাম অনেক কমলেও এলাকায় ব্যাপক ব্যবহৃত বসুন্ধরা গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় দাম কমার কোন প্রভাবই বোয়ালমারীতে পড়েনি। অধিকাংশ পরিবারেই বসুন্ধরা গ্যাস ব্যবহৃত হয়। আর বসুন্ধরা গ্যাসের সিলিন্ডার বাজারে না থাকায় অন্য কোম্পানির গ্যাসের উপর চাপ বেড়েছে। আর এ সুযোগে অন্যান্য কোম্পানির গ্যাসের সিলিন্ডারও খুচরা বিক্রেতারা বেশি দামে বিক্রি করছেন।

শুক্রবার সকালে পৌরশহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানেই বসুন্ধরা কোম্পানির গ্যাসের সিলিন্ডার নেই। আর থাকলেও নির্ধারিত দামে মিলছে না এলপিজি। ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ৯৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ১২৭০ টাকায়।

একাধিক খুচরা দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দাম কমার পরে নতুন করে বসুন্ধরা গ্যাসের সিলিন্ডার পাইনি। আগের রেটের যা আছে তাই ১২৫০ টাকা থেকে ১২৭০ টাকায় বিক্রি করছি।

উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক বলেন, বাড়িতে বসুন্ধরা গ্যাস ব্যবহার করি। কয়েকদিন হলো গ্যাসের একটি সিলিন্ডার ফুরিয়ে গেছে। অধিকাংশ দোকানে খোঁজ নিয়ে বসুন্ধরা গ্যাসের সিলিন্ডার পাইনি। একটি দোকানে পেয়েছি। দাম চেয়েছে ১২৫০ টাকা।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারীস্থ বসুন্ধরা কোম্পানির গ্যাসের ডিলার সামচুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলেন, বসুন্ধরা কোম্পানির গ্যাসের সিলিন্ডারের সংকট। কোম্পানি আমাদের সরবরাহ করতে পারছে না। সারা বাংলাদেশেই বসুন্ধরা কোম্পানির গ্যাসের একই অবস্থা। তাই দাম কমার পরে কোন গ্যাসের সিলিন্ডার পাইনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন বলেছেন, ‘এলপিজির যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এটা বিইআরসি করে দেয়নি। সব কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেই এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তিমূল্যের ওপর নির্ভর করে এর দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সৌদি আরব দাম কমিয়েছে বলেই আমরা কমাতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘তাই এই মূল্যে কোম্পানিগুলো গ্যাস বিক্রি করতে বাধ্য। ভোক্তা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বোতলজাত এলপি গ্যাস বিক্রি করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(কেএইচএফ/এএস/জুলাই ০৭, ২০২৩)