রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : রৌমারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাশেমের সম্মানী ভাতাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টের আদেশ মানছেন না রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান। উপরোন্ত ওই ভাইস চেয়ারম্যানের অফিসের চেয়ার টেবিলসহ জরুরী কাগজপত্র গায়েব করে দেয়া হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যানের অভিযোগ, ইউনিসেফের চুরি হওয়া ত্রাণ সামগ্রী উদ্ধারে সহযোগিতা করায় ইউএনও’র রোষানলে পড়েছেন তিনি।

জানা গেছে, রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলা চেয়াম্যান ও মোহনপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এমডি আব্দুস সামাদসহ অনেকে বাদি হয়ে স্থানীয় সরকারের সচিবসহ ১৬জনকে আসামী করে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন যার নং ৮৯৪৪/১৪। এর পেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারক মিসেস ফারাহ মাহবুব ও মি. কাজী মো. এজারুল হক আকন্দের একটি বেঞ্চ গত ২০ অক্টোবর উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে আনীত পরিপত্রে উল্লিখিত বিষয়টি ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন।

এছাড়াও এক মাসের মধ্যে কেন তাদের বেতন বা সম্মানী প্রদান করা হবে না মর্মে শোকজ করেন। এদিকে ওই আদেশটির জাবেদা কপি গত ২৬ অক্টোবর রৌমারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাশেম কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিল করেন এবং অনুলিপি সংশ্লিষ্ট এমপি, ডিসি ও ইউএনওকে প্রদান করেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। গতকাল মঙ্গলবার সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে এমপি রুহুল আমিন বিষয়টি উত্থাপন করলে তারা জবাবে বলেন, এ মামলায় আমাদের আসামী করা হয়নি এবং অফিসিয়াল কোন চিঠিপত্র আমাদের কাছে আসেনি। ফলে আমরা এ আবেদনটি গ্রহন এবং কোন ব্যবস্থাও গ্রহন করছি না।

অপরদিকে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে, চুরি হওয়া ইউনিসেফের ত্রাণ সামগ্রী উদ্ধারে সহযোগিতা করায় আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে নেমে আসে অন্যায়ের খড়গ। এছাড়াও আবুল হাশেম দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করায় ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে তার অফিসের চেয়ার টেবিল ও জরুরী কাগজপত্র ন্যামপ্লেট সরিয়ে ফেলেন। এ বিষয়ে রৌমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। ভাইস চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, চুরির সামগ্রী ধরিয়ে দেয়ার অপরাধে আমাকে সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে বিরত রেখেছে। কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই আমার অফিসের চেয়ার টেবিল ও কাগজপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ইউএনও সাহেব সমন্বয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমার অফিসের চেয়ার টেবিল সরানোর কথা বললেও সেখানে এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তই হয়নি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি আইনী লড়াই চালিয়ে যাবো।

এ ব্যাপারে ইউএনও আব্দুল হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, পরিপত্র অনুযায়ী তিনি কোন বেতনভাতা বা সম্মানী পান না। যেহেতু হাইকোর্টের কোন চিটিপত্র আমরা পাইনি ফলে তার পক্ষে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারছি না। আর সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে তার অফিসের চেয়ার টেবিল সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে তাই সরানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এমপি রুহুল আমিন বলেন, ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস থেকে চেয়ার টেবিল সরানোর কোন সিদ্ধান্ত সমন্বয় কমিটিতে হয়নি। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির অফিস থাকবে না চেয়ার টেবিল সরানো হবে তা তো হতে পারে না।

(আরআইএস/এএস/অক্টোবর ২৯, ২০১৪)