হাসপাতাল কথন: পর্ব ৫
লোডশেডিংয়ে একমাত্র ভরসা টর্চ লাইটের আলো
শেখ ইমন, শৈলকুপা : গোটা হাসপাতাল অন্ধকারাচ্ছন্ন। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এটা কোন হরর মুভির দৃশ্য। কিন্তু না, একটি সরকারী হাসপাতালের চিত্র এটি। পাশের টেবিলে কী রাখা আছে তাও ঠিকমত দেখা যাচ্ছে না। ফ্লোর ও বেডে আছে অসংখ্য রোগী। নেই জেনারেটরের ব্যবস্থাও। কিন্তু লোডশেডিংয়ের এর জন্য তো আর চিকিৎসা সেবা বন্ধ করা যাবে না। তাই এই পরিস্থিতিতেই টর্চের আলোই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন নার্সরা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা সরকারী হাসপাতালের এমন করুন দশায় ত্যক্ত-বিরক্ত। এদিকে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছে, পুরাতন বিল্ডিং থাকাকালিন সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু নতুন বিল্ডিংয়ে জেনারেটর বা সৌর বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা নেই। অতিদ্রুতই সমস্যার সমাধান করা হবে।
তবে অভিযোগ রয়েছে অব্যাহত লোডশেডিং থাকলেও জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে আগ্রহী নয় হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
এমন করুন দশা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। বুধবার সন্ধায় গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে এমন ভৌতিক দৃশ্য দেখা যায়। নেই বিদ্যুৎ,রোগীর স্বজনরা হাতে থাকা মোবাইলে টচ জ¦ালিয়ে বসে আছেন রোগীর পাশে। আর গরমে ছটফট করছেন। অন্যদিকে টর্চ জ¦ালিয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন নার্সরা। বিরক্তির ছাপ চোখে-মুখে।
নার্সদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, এমনিতেই প্রচন্ড গরম। তারপর আবার বিদ্যুৎ নেই। টর্চের আলো জ্বালিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি খুবই বিরক্তিকর। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চান তারা।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী শাওন বলেন, সরকারী হাসপাতালের অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে যাবে। অন্ধকারে ওষধও খাওয়ার অবস্থা নেই।
আরেক রোগী মিরাজ বলেন, বিদ্যুতের আলোর কাজ কি আর টর্চের আলোই হয়? অন্ধকারে হাটাচলা করতে গিয়ে ফ্লোরে থাকা রোগীদের সাথে ধাক্কা লাগে মাঝে মাঝেই। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা জরুরী।
এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুজায়েত হোসেন বলেন, পুরাতন বিল্ডিং থাকাকালিন সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু নতুন বিল্ডিংয়ে জেনারেটর বা সৌর বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা নেই। যার ফলে বিদ্যুৎ গেলেই হাসপাতাল অন্ধকার হয়ে যায়। অতিদ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
(এসআই/এসপি/জুলাই ১৩, ২০২৩)