চাঁদপুর প্রতিনিধি : মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে দু’পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহ ও পর্যবেক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় মতলব দক্ষিণ থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের পিয়ন ইসমাইল হোসেন (৪০)কে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার এইচএসসি হিসাব বিজ্ঞান ১ম পত্র পরীক্ষায় নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ও কেন্দ্রের আশপাশ এলাকায় এ ঘটনাগুলো ঘটেছে। নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে নারায়ণপুর পপুলার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। মঙ্গলবার ঐ কেন্দ্রের ২০১নং কক্ষের কবির নামক পরীক্ষার্থীকে কলেজের পিয়ন ইসমাইল হোসেন নকল দিতে গেলে কক্ষের পর্যবেক্ষক মতলব রয়মনেন নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের সিনিয়র প্রভাষক মো. আবুল কাশেম উক্ত নকল হাতে নাতে ধরে ফেলেন এবং নকলটি তিনি নিয়ে নেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রভাষক মো. আবুল কাশেম কেন্দ্র থেকে বের হয়ে নারায়ণপুর সিএনজি স্ট্যান্ডে আসার পথে বাজারের ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে ওঁৎ পেতে থাকা নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের ৭/৮জন উচ্ছৃঙ্খল পরীক্ষার্থী তাকে ঘিরে ফেলে এবং মারধর করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা দেখে এগিয়ে আসলে উচ্ছৃঙ্খল পরীক্ষার্থীরা পালিয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম এ সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহ করার অপরাধে নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের পিয়ন বাড়ৈগাঁও গ্রামের আ. গনির ছেলে ইসমাইল হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটককৃত পিয়ন ইসমাইল পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের কথা স্বীকার করেন। তবে কে বা কারা তার মাধ্যমে নকলগুলো কেন্দ্রে সরবরাহ করেছে এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হয়নি। পরীক্ষা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মো. আবুল কাশেম সাংবাদিকদের জানান, যে ছাত্রের কাছ থেকে নকলটি উদ্ধার করা হয়েছিলো তার নাম মো. কবির হোসেন। সে ঘিলাতলী গ্রামের লুৎফুর রহমান প্রধানের ছেলে। কবিরও কাজিয়ারা ইব্রাহীমসহ ৭/৮জন ছাত্র তাকে আক্রমণ ও হামলা করেছে বলেও তিনি জানান।
এ ঘটনায় পরীক্ষার্থী কবির, ইব্রাহিম ও পিয়ন ইসমাইলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় মামলা করেছে বলে সাংবাদিকদের জানান। কতিপয় শিক্ষক পরীক্ষা শুরু হলে প্রশ্নোত্তর ফটোকপি করে এ পিয়নকে দিয়ে কেন্দ্রে নকল সরবরাহ করে আসছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের পিয়নের বিরুদ্ধে নকল সরবরাহের অভিযোগ থাকায় তাকে আটক করা হয়েছে। পিয়নকে দিয়ে যারা নকল সরবারহ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। নকল করতে বাধা দেয়ায় শিক্ষকের উপর হামলায় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষকের উপর হামলাকারী কবির ও ইব্রাহীম নামক দু’ পরীক্ষার্থীকে অসুদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে।
(এমজে/এএস/এপ্রিল ৩০, ২০১৪)