গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণণবাড়িয়া : প্রাচ্যের 'অক্সফোর্ড' খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ডাবল স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত কৃতী কন্যা সোনিয়া আক্তারকে আজ বুধবার সকালে তাঁর জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে এলাকাবাসির পক্ষ থেকে ঘটা করে এক 'নাগরিক সংবর্ধনা' দেয়া হয়েছে। 'কৃতী কনৌা' হিসেবে সংবর্ধিত সোনিয়া আক্তার বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ল্যাকচারার পদে কর্মরত রয়েছেন।

জানা গেছে, কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বুধবার বেলা ১১টায় ওই ব্যতিক্রমী 'নাগরিক সংবর্ধনা' অনুষ্ঠিত হয়।

কৃষ্ণনগর এলাকাবাসির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওই নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীনগর পৌরসভার মেয়র, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শিব শংকর দাস।

এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ নবীনগর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক, মো. আলাউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু মোছা, নবীনগর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ সারোয়ার বাতেন, কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাজী মো. মলাই মিয়া, অধ্যক্ষ নিয়াজ মো. কাজল, প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌসুর রহমান, সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. মনির হোসেন, নবীনগর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ নেতা বিপুল চন্দ্র সাহা, এবং নবীনগরের কথার সম্পাদক ও দৈনিক বাংলা ৭১ এর বিশেষ প্রতিনিধি গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু।
স্থানীয় সাংবাদিক নূরুল আলমের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা, নবীনগর অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম নোয়াফের প্রতিষ্ঠাতা সহ সভাপতি, কৃষ্ণনগরের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম খান।

অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত কৃতী কন্যার স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানান কষ্টের জীবন কথা ও অজানা সব তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কৃতী কন্যার প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক একেএম জসীম উদ্দিন, কৃষ্ণনগরের কৃতী ফুটবলার আলী আজ্জম স্বপন, কৃতী কন্যার চাচাতো ভাই মো. মনিরুল ইসলাম, খেলাঘর আসরের সেক্রেটারী, দৈনিক বাংলার নবীনগর প্রতিনিধি জামাল হোসেন পান্না ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট এম, নাইমুর রহমান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে সিনিয়র সাংবাদিক ও সংস্কৃতিসেবী গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর অনুরোধে দর্শকসারি থেকে সংবর্ধিত কৃতী কন্যা সোনিয়া আক্তারের দরিদ্র কৃষক বাবা আবুল কাশেম ও গৃহিনী মা বরকতুন্নেছা বেগমকে তুমুল করতালির মাধ্যমে মঞ্চে এনে প্রধান অতিথি ও কৃতী কন্যার দুই পাশে বসানো হয়। এসময় সংবর্ধিত কৃতী কন্যা ও তার বাবা মা'র চোখ দিয়ে আনন্দে জল পড়তে দেখা যায়। এ দৃশ্য অবলোকন করে গোটা মঞ্চের অতিথিবৃন্দসহ অনুষ্ঠানে আগত অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

পরে সংবর্ধিত কৃতী কন্যা সোনিয়া আক্তারের হাতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে দুটি সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেয়র শিব শংকর দাস ও স্থানীয় এলাকাবাসি। এ সময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি'র হাতে একটি শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন খান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা একটি দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া সোনিয়া আক্তার তার শিক্ষা জীবনে ধারাবাহিক অসামান্য ফলাফল অর্জন করে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ডাবল স্বর্ণ পদক পাওয়ায়, তাকে (সোনিয়া) শিগগীরই নবীনগর উপজেলা সদরে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুলের উপস্থিতিতে অনুরূপ আরেকটি 'সংবর্ধনা' প্রদান করার জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানান।

জবাবে সংবর্ধিত কৃতী কন্যা ২০১৪ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি পাশ করা সোনিয়া আক্তার তার বক্তব্য প্রদানকালে এলাকাবাসির পক্ষ থেকে ঘটা করে এমন নান্দনিক আয়োজনে 'নাগরিক সংবর্ধনা' প্রদান করায় এলাকাবাসিসহ আয়োজকদের প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রচন্ড গরমের মধ্যেও প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে চলা এই নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন।

(জিডি/এসপি/জুলাই ১৯, ২০২৩)