বিপুল কুমার দাস, রাজৈর : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর  উপজেলার  জলিরপাড় ইউনিয়নের কলিগ্রামে কলেজ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার মনমথ বাড়ৈ ছেলে বিনয় বাড়ৈ বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী তরুণীর সুস্মিতা বৈরাগীর (২০) পরিবার এবং অভিযুক্ত উভয়ই কলিগ্রাম বেবি বাজার এলাকার বাসিন্দা।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে বাড়ির নিকটস্থ বেবী বাজারে তার ব্যবহারিত মুঠো ফোনটি মেরামতের জন্য উজ্জল গাইন নামক একজন মোবাইল মেকানিকের কাছে সার্ভিসিং করাতে দেন।
উজ্জ্বল সেই মোবাইল মেরামত করার পরে তার বন্ধু বিনয় বাড়ৈ কে সাথে নিয়ে তরুণীর মোবাইলে থাকা তার আপত্তিকার ছবি সহ মোবাইলের সিকিউরিটি এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাক করে।

তার ঐ ব্যক্তিগত ছবি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিনয় বাড়ৈ ভুক্তভোগী তরুণীকে তার বাড়ির পাশ দিয়ে চলাচল করার সময় কুপ্রস্তাব দেওয়া সহ বিভিন্ন ভাবে যৌন হয়রানীর করার চেষ্টা করে।
এটাও বলে যদি সে তার প্রস্তাবে রাজি না হয় তাহলে তার ব্যক্তিগত আপত্তিকার ছবি সে ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেবে।

ভুক্তভোগী তরুণী সামাজিক মান-সম্মানের ভয়ে বিষয়টি প্রথমে গোপন রাখে। কিন্তু সমাজের অন্তরালে দেড় বছর ধরেই বিনয় তাকে উত্তক্ত করে আসছিল। অসহায় তরুণী সেটি সহ্য করে।

তরুণী কিছু দিন আগে তার বাড়ির পাশে একটি দোকানে ঝাল মুড়ি খেতে গেলে সেদিন অভিযুক্ত বিনয় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পুনরায় তাকে আবার যৌন হারানি করার চেষ্টা সহ তার আপত্তিকর ছবি অনলাইনে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখায় ।সেই সাথে বিনয় তার বুকের ওড়না ধরে টান দিলে ভীত সন্ত্রস্ত তরুণী বাড়িতে চলে আসে। তার কয়েকদিন পরে তরুণী তার কলেজে গেলে তার বন্ধুবান্ধব তাকে দেখে ভাইরাল ভাইরাল বলে ক্ষেপাতে থাকে। তার আপত্তিকর ছবি ইতিমধ্যে বিনয় অনলাইনে ভাইরাল করে দিয়েছে বিষয়টি তখন সে জানতে পারে।

ঐ দিন তরুণী নিজ ঘরে এসে তার বাবা মার কাছে দেড় বছর ধরে তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা প্রকাশ করেন এবং ওইদিন রাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীদের সহায়তায় আত্মহত্যা করতে সে ব্যর্থ হয়। তার বাবা-মা স্থানীয় গ্রাম্য প্রতিনিধিদের কাছে বিষয়টি অবগত করলে তাদের কাছ থেকে কোন সমাধান ও বিচার পাননি।

পরবর্তীতে মুকসুদপুর থানা একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় সেখানেও কোন আইনি সহযোগিতা মেলেনি। ভুক্তভোগী তরণীর মা অর্পা বৈরাগী জানান তাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোন পুলিশ তদন্তের জন্য পৌঁছায়নি। পরবর্তীতে তারা গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

সাংবাদিকরা সত্যতা উদঘাটন জন্য বিনয়ের বাড়িতে গেলে তার বাড়ির সদস্যরা সাক্ষাৎকার দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করে এবং সাংবাদিকদের উপর প্রচন্ডভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিনয়ের ভাই সাংবাদিকদের মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজহ হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগী পরিবার এবং তরুণী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।

(বিডি/এসপি/জুলাই ২৪, ২০২৩)