মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়েছে গবাদী প্রানীর মরণঘাতি রোগ লাম্পি স্কিন ডিজিস।আতংকে দিন কাটাচ্ছে গবাদী প্রানীর খামারী। বিভিন্ন জায়গা অনেক গবাদী প্রানী মারা যাচ্ছে।চিকিৎসার অপ্রতুলতার জন্য সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছে না খামিরা।

ঘাটাইল প্রানী সম্পদ সুত্রে জানা যায় প্রতিদিন ১০টি করে লাম্পি স্কিন আক্রান্ত প্রানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ায় গুটি গুটি ক্ষত হয় এবং কখনো কখনো দুই পায়ের মাঝে বুকের নিচে পানি জমতে পারে। শরীরের ফোসকা থেকে ক্ষত সৃষ্টি হয়।চোখ দিয়ে পানি পড়ে।আক্রান্ত গরুর ১০৪ ফাঃ থেকে ১০৫ ফাঃ জ্বর থাকে ক্ষুধা মন্দা দেখা দেয়, নাক মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হয়। লাম্পি স্কিন রোগের এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা বা প্রতিষেধক নেই। আক্রান্ত পশুকে ঘন ঘন স্যালাইন পানি, বেশি বেশি কাঁচা ঘাস খাওয়াতে হবে।

প্রানী সম্পদ চিকিৎসকের মতে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক থাকতে হয়। যেমন অসুস্থ গরুকে ইনজেকশন দেওয়ার পর একই সিরিঞ্জ অন্য গরুর শরীরে ব্যবহার করা যাবে না। এতে অন্য গরুরও আক্রান্ত হতে পারে। তবে কিছু কিছু খামারীরা তাদের বাড়িতে ভেষজ চিকৎসা দিয়ে থাকে যেমন নিম পাতা, হলুদ বাটা ইত্যাদি।

কোন কোন এলাকায় অনভিজ্ঞ পল্লী চিকিৎসক দিয়ে ভুল চিকিৎসা করানো ফলে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। সারা উপজেলায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকার কারনে প্রান্তিক পর্যায়ে গিয়ে চিকিৎসা দিতে পারছে না। এমনকি গরুর মালিক খরচের সংকুলান না হওয়ায় হাসাপাতালে এনে চিকিৎসা দিতে পারছে না। খামারীরা আতংকে বেশী দামী গরু অল্প দামে বিক্রি করে দিচ্ছে।

প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলছেন, এলএসডি একধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এটি গরুর একধরনের চর্মরোগ। বিভিন্ন কীটপতঙ্গ যেমন মশা ও বিশেষ প্রজাতির মাছি ইত্যাদির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

এ ধরনের কীটপতঙ্গ আক্রান্ত গরুকে দংশন করার পর অন্য একটি সুস্থ গরুকে দংশন করলে সেই গরুটিও আক্রান্ত হয়। আবার আক্রান্ত গরুর লালা খাবারে মিশে এবং খামার পরিচর্যাকারী ব্যক্তির কাপড় চোপড়ের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

রসুলপুর ইউনিয়নের প্যাচার আটা গ্রামের খামারী মোঃ তারেক জানান আমি কোরবানীর ঈদে গরু বিক্রি করেছি।এখন নতুন গরু কিনবো ভাইরাসের জন্য কিনতে পারছি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রানী সম্পদ অফিসে কর্মরত ব্যাক্তি জানান, গবাদী প্রানী মারা যাওয়ার হিসাব আমাদের কাছে নেই। তবে অনেক প্রানী মারা যাচ্ছে সেটা আমরা খবর পাচ্ছি।

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ একেএম আনিসুর রহমান জানান আমরা রোগ থেকে রক্ষার জন্য টিকা প্রদান,সচেতনাতার জন্য খামারীদের নিয়ে আলোচানা করে যাচ্ছি।

(এসএম/এসপি/জুলাই ২৭, ২০২৩)