বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউপি'র চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে টেলিফোনে দীপংকর সরকার নামের এক ব্যক্তিকে অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকী দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউপি চেয়ারম্যান বড়াইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। ভূক্তভোগী দীপংকর সরকার ওই চেয়ারম্যানের হুমকীরর কারণে নিজের বাড়ি ফিরে যেতে সাহস করছেন না।

এদিকে চেয়ারম্যানের অশ্রাব্য ভাষার টেলিফোন কথোপকথনের অডিও রেকর্ডটি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে।

ভূক্তভোগী দীপংকর সরকার (৩৮) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, বড়াইল ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে তাদের বসবাস। গত ৩০ জুলাই সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে তার কাকাতো ভাই উজ্জ্বল সরকারের স্ত্রী এক কন্যা সন্তানের জননী উষা রাণী সরকার (২০) বাড়িতে গলায় ফাঁস লাড়িয়ে আত্মহত্যা করেন।

দীপংকর সরকার জানান, এ ঘটনার পর পুলিশ এসে ময়না তদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়। ময়না তদন্তের পর রাধানগর শ্মশানঘাটে গৃহবধূ উষা রাণীর সৎকার করা হয়। এরপরই ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন আমাকে এ মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আমার কাছে নগদ টাকা দাবী করেন। তানাহলে এ ঘটনায় মামলা করে আমাকে ১ নম্বর আসামী দেয়া হবে।

আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে, পরে চেয়ারম্যান আমার স্ত্রীকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আমার স্ত্রী তখন চেয়ারম্যানে গালাগালি মোবাইলে রেকর্ড হচ্ছে' এ কথা বলতেই অকথ্য ভাষায় আমার স্ত্রীকে ধমকাতে থাকে। পরে আমি চেয়ারম্যানকে কল ব্যাক করতেই তিনি আমাকে 'মালুর ঘরের মালু, ফকিরন্নির পুত, তুই তুকারি করে আমার বাবামাসহ আমাকে অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। যা কোন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সঙ্গে এ প্রতিবেদক কথা বললে, তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেন, 'গালিগালাজ তারমতো লোকের প্রাপ্য ছিলো। বরং আমি তাকে কমই গালিগালাজ করেছি। সামনে পাইলে তার কপালে আরও ছিদ্দত (কষ্ট) আছে।'

একজন চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়ে আপনি কি এমন অশ্রাব্য ভাষায় কাউকে বাপ মা তুলে 'মালুয়ান' বলে গালিগালাজ করতে পারেন? এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন,' পারি, এসব বাজে লোকের ক্ষেত্রে পারি।'

নবীনগর থানার ওসি মাহাবুব আলম বলেন, 'অডিওটি শুনেছি। বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে, তিনি চেয়ারম্যানের গালাগালির রেকর্ডটি শুনে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেবেন বলে জানান।

পরে চেয়ারম্যানের অশ্রাব্য ভাষার অডিও রেকর্ডটি জেলা প্রশাসক শাহগীর আলমের হোয়াটসআপে প্রেরণ করা হলে, তিনিও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে এ প্রতিবেদককে আশ্বস্থ করেন।

(জিডি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২৩)