সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : কৃষকরা খাদ্য ও অর্থকরী ফসল হিসাবে শুধু ধান চাষই বেশি করে। নেত্রকোনার কেন্দুয়াসহ বিভিন্ন উপজেলায় ধান চাষের আগ্রহই বেশি কৃষকের। ধান চাষ করে যে অর্থ পাওয়া যায় ভূট্টা চাষ করে এর চেয়ে অনেক বেশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে। ভুট্টা চাষে বদলাতে পারে কৃষকের ভাগ্য। এমনটিই দাবি করলেন কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা। তিনি বলেন কেন্দুয়া উপজেলায় বিশ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়। প্রতি বছর কৃষকরা বোরো ব্রি- ধান ৮৯ সহ অন্যান্য জাতের ধান চাষে অনেক আগ্রহ দেখায়। এতে হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ ফলন হতে পারে ৮ মেট্রিক টন। ১ মেট্রিক টন ধানের গড় মূল্য হতে পারে ২৫ হাজার টাকা। সে তুলনায় ১ হেক্টর জমিতে ভূট্টার চাষের ফলন হতে পারে ১০ মেট্রিক টন। এক্ষেত্রে এক মেট্রিক টন ভূট্টার গড় মূল্য হতে পারে সাড়ে ২৭ হাজার টাকা। 

শারমিন সুলতানা আর বলেন, কার মনে না চায় মডেল হতে বা পুরস্কার পেতে? কিন্তু আমাদেরতো অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। চাইলেই সবকিছু পারা যায় না। আমি মাঠে থাকতেই পছন্দই করি বেশি, কারণ কৃষকদের সাথে সরাসরি মাঠে গিয়ে কাথা বললে তাদের মনের ভাষা মুখের ভাষা ও চোখের ভাষা পুরোপুরি বুঝা যায়। এতে নিজেরও ভালো লাগে কৃষকদের মুখেও হাসি ফুটে।

তিনি অন্যান্য সংস্থার সাথে তুলনা দিয়ে বলেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে অন্যান্য সরকারি সংস্থার যেমন যানবাহনের সুবিধা রয়েছে আমাদের কেন্দুয়ায় এখনো সে সুযোগ হয়ে ওঠেনি। হয়তোবা আস্তে আস্তে হবে।

কৃষকদের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, কৃষকরা সহজে পরামর্শ গ্রহণ করতে চান না। তারা যে এলাকায় ধান চাষ কিংবা অন্যান্য ফসলের চাষে অব্যস্ত থাকেন সেই জাতের চাষই বেশি করতে চান।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা মতে এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবেনা আমরাও সেই চেষ্টাও করছি। আশা করি একদিন সব চেষ্টাতেই আমরা সফল হবো।

তথ্য মতে জানা যায় ১ মেট্রিক টন ধানের চেয়ে ১ মেট্রিক টন ভূট্টার দাম আড়াই হাজার টাকা বেশি। আবার এক হেক্টর জমিতে ভুট্টার ফলন হবে ১০ মেট্রিক টন আর ধানের ফলন হবে ৮ মেট্রিক টন। ভূট্টা উৎপাদন করতে গিয়ে সার, কীটনাশক ও সেচও অনেক কম লাগবে আবার ফলনও উৎপাদন মূল্য বেশি হবে। অথচ কৃষকরা অধিক পরিমাণ লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকলেও ধান চাষেই আগ্রহ বেশি। কেন্দুয়া উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো ও আমনের আবাদ করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে গত বছর মাত্র ২০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষা করে সফলতার মুখ দেখেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা মঙ্গলবার দুপুরে তার কার্যালয়ে এ প্রতিনিধির সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে গিয়ে এ মত প্রকাশ করে বলেন, আগামী বছর ভূট্টা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হবে। তিনি বলেন কৃষকরা সেই পরামর্শ কাজে লাগালে ভূট্টা চাষে ভাগ্য বদল হতে পারে কৃষকের।

(এসবি/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০২৩)