রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় পরস্পরকে দায়ী করেছেন উভয়পক্ষ। তবে ঘটনার পর থেকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ তাঁর পক্ষের লোকজন পুনরায় হামলা ও গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, রয়েছে এমন অভিযোগও। এ সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দু্ল্লাহ আল মাহমুদসহ ৮ জনের নামে শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত পৌণে একটায় থানায় মামলা করেছেন শহর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুল। এ মামলায় শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে আব্দু্ল্লাহ আল মাহমুদের পক্ষের তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন, পৌরসভার পাথালিয়া গ্রামের মো. ওমর (৪৭) ও তাঁর ছেলে রোমান (২২) এবং গোলাম আজমের ছেলে লিখন (২৫)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের লোকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর শিমুলের গাড়িতে হামলা চালান। এতে কাউন্সিলর শিমুলসহ চারজন আহত হন। আহতরা হলেন, কাউন্সিলরের ছেলে জখমী বিধান (২২) ও জখমী বাধন (১৯) এবং আমিনুল ইসলামের ছেলে জখমী শিপু (৩৫)।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুল জানান, আমি রাতে স্থানীয় ফৌজদারী মোড়ে সালিশ শেষে প্রাইভেট কারযোগে বাড়ি ফিরছিলাম। আসামি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বাড়ির সামনে পৌঁছলে আমার গাড়ির গতিরোধ করেন আব্দুল্লাহ ও তাঁর লোকজন। আগে থেকেই তাঁরা ওৎপেতে ছিলেন। তাঁরা আমার গাড়িতে হামলা চালান। আমাকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারধর করেন। এতে আমিসহ চারজন আহত হই। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাঁরা এ হামলা চালান ও মারধর করেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের মা নূরজাহান বেগম (৫৫) জানান, শুক্রবার (১১ আগস্ট) দুপুরে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের শ্যালক লিখনের খেতে গিয়ে ধান খায় কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুলের ছেলে বিধানের খামারের কয়েকটি ছাগল। এ নিয়ে বিধানের খামারের কর্মচারীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে শিমুল ও তাঁর ছেলে বিধানের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার ছেলে ওপর হামলা চালান। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে গর্ভবতী মৌ, মৌসুমী বেগম, স্কুলছাত্রী ঋতু, লিখন, ওমর ও সালমা বেগম আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ৪ জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ওপর হামলা এবং মারপিট করে উল্টো পৌরসভার কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুল বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দিয়েছেন। এ মামলায় হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২ জনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর বাকিরা গ্রেফতার আতংকে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। পুনরায় হামলা ও গ্রেফতার এড়াতে আমার পরিবারের লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এ ঘটনায় একপক্ষ মামলা দিয়েছে। মামলা রুজু করে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছি। অন্য কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি বলেও জানান তিনি।

(আরআর/এসপি/আগস্ট ১২, ২০২৩)