ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : বাবা ছিলেন বর্তমান ভারতের কোন এক জেলার বাসিন্দা। নিরাপদ আশ্রয়ের খোজে চলে আসেন বর্তমান বাংলাদেশে। আট সন্তানের জনক বাবা কোন স্থানী ঠিকানা গড়তে পারেনি। সেই সুত্রে সন্তানরাও থেকে গেছেন ঠিকানা হীন। তাদের এই প্রায় পৌনে এক শতাব্দীর দূঃখ শেষ হতে যাচ্ছে বর্তমান সরকারের হাত ধরে।

রাণীশংকৈল উপজেলার চতুর্থ পযার্য়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পে আক্তার হোসেন তার বাড়ি বুঝে পাওয়ার পর বলেন, ৭০ বছর পর নিজের ঠিকানা হলো।

তিনি বলেন, আমার বাবা বেচে থাকতে কোনো দিন নিজের বাড়ি বানাতে পারেনি। ভারত থেকে পালিয়ে এসে এই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে গেছেন। যার বাসায় কাজ করত তার জমিতে আমাদের দয়া করে থাকতে দিত। অভাবের সংসারে বাবা কোনো দিন জমি কিনে বাড়ি কিনতে পারেনি। আমিও সারাটা জীবন অন্যের জমিতে বাড়ি করে ছিলাম।
কান্না কন্ঠে আক্তার বলেন, সারাটা জীবন অন্যের জমিতে বাস করতে গিয়ে নানা কথা শুনতে হয়েছে। অনেক খারাপ কথা বলার পরেও সহে যেতে হয়েছে।

এখন যতই অভাবে থাকিনা কেন ঝড় বাদলের দিনে মাথার উপরে আশ্রয় হলো। আধা পাকা হওয়ায় আর বছরে বছরে ঠিক করতে হবে না। ঝড়ের দিনে চাল উরে যাওয়ার ভয় নাই।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের জমি দিলেন, বাড়ি দিলেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নামাজের সময় দোয়া করি।

উপজেলার রাতোর ইউনিয়নে আরজিতগাও এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পের ৪৮টি ঘরের মধ্যে একটি ঘড় পেয়েছে এই অন্ধ দম্পতি।

উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহরিয়ার রহমান বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে উপকার ভোগীদের তালিকা চুরান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে প্রধান করে আরেকটি বাছাই কমিটি আছে। সেই কমিটি যাচাই বাছাই করে চুরান্ত তালিকা করা হয়।

ভুমিহীনদের আবেদনের পেক্ষিতে যাচাই বাছাই করে ভুমিহীনদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এ জন্য জনপ্রতিনিধি সহ স্থানী গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তা ও পরামর্শ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
যার ফলে প্রকৃত উপকার ভোগীরা বের হয়ে এসেছে।

উপজেলার চতুর্থ পযার্য়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২১০টি ঘর গত বৃহস্পতিবার উপকারভোগীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত বুধবার রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সারা দেশের ন্যায় রাণীশংকৈল উপজেলার ২১০টি ঘর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

(এআই/এসপি/আগস্ট ২১, ২০২৩)