বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেকের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা আবেদনটির অবশেষে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ে আবেদনটি দাখিল করার প্রায় তিনমাস পর স্থানীয় সরকার বিভাগের (উপজেলা -২ শাখা) উপ সচিব মাসুরা বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অভিযোগটি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য গতকাল (২৩ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ পরিচালককে লিখিতভাবে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

ইসলামী ঐক্য জোটের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নবীনগরের স্থানীয় হেফাজতের নেতা মাওলানা মেহেদী হাসান গত ২৫ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে (এলজিইডি) উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাদেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে ওই আবেদনটি দাখিল করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেকের বিরুদ্ধে আনীত দুই পাতার ওই আবেদনপত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, অর্ধ শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পাদন না করেই লাখ লাখ টাকা অর্থ লুণ্ঠন করেছেন বলে অভিযোগ করেন মাওলানা মেহেদী হাসান। ওই আবেদনে জাকির হোসেন সাদেকের বিরুদ্ধে আনা এসব নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানানো হয়।

ওই সময় মাওলানা মেহেদী এসবের প্রতিকারের দাবিতে নবীনগর উপজেলা সদরে একটি মানববন্ধনেরও ডাক দেন।

এ নিয়ে সে সময়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে এ নিয়ে সব মহলে আলোচনার ঝড় ওঠে। তখন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল দুই পক্ষকে তাঁর গ্রামের বাড়িতে (বাড়াইল) তলব করেন।

এ বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নবীনগর উপজেলা হেফাজত ইসলামির সহ সভাপতিমাওলানা মেহেদী হাসান আজ দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন,'এমপি মহোদয় আমাদের দুজনকেই বাসায় ডেকেছিলেন। তবে এ নিয়ে মানববন্ধন কিংবা ফেসবুকে আমি যেন কোন লাইভ না করি, সেজন্য আমাকে পরামর্শ দেন। এতে নবীনগরের বদনাম হবে বলে তিনি আমাদেরকে জানান। তাই সেসময় মানববন্ধন করিনি। তবে সুষ্ঠু তদন্তে প্রকৃত সত্যটা বেড়িয়ে আসুক, সেটি এমপি মহোদয় নিজেও চান।'

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় লাউর ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সাদেক আজ দুপুরে বলেন,'আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি, আমার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক এবং কাল্পনিক ও অসত্য। সুষ্ঠু তদন্ত হলে সব অভিযোগই মিথ্যে প্রমাণিত হবে। তাই আমি সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রস্তুত ইনশাল্লাহ।'

এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জিয়াউল হক মীর আজ দুপুরে বলেন,'তদন্তের নির্দেশনা পত্রটি আমার হোয়াটসাপে দেখেছি। তবে এখনও মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পাইনি। পেলে তদন্ত করে যথা সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো।'

এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ দলীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫) এবাদুল করিম বুলবুলের সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য নেয়া যায়নি।

(জিডিএ/এএস/আগস্ট ২৪, ২০২৩)