আমিনুল ইসলাম, শ্রীনগর : মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউপি চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় ড্রেজার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে সূর্য খানের বাড়ি সংলগ্ন পদ্মা নদীর শাখা খালে অবৈধভাবে ড্রেজার স্টেশন স্থাপন করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার হোসেন শাহাদাতের নিয়ন্ত্রণে ড্রেজারটির দায়িত্বে রয়েছেন চেয়ারম্যানের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত আলতাফ হোসেন ও নুরজামান সিন্ডিকেট। 

সচেতন মহলের প্রশ্ন জনপ্রতিনিধি হয়ে তিনি এ অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায় জড়ায় কিভাবে ? এতো দেখি বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মতো! এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের আর কিছু বলার থাকে না। তাহলে এ অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য রুখবে কে ? সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় জন প্রতিনিধির এমন কর্মকান্ডে হতাশ তারা। উপজেলা প্রশাসন অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ ও আর্থিক জরিমানা করলেও সুযোগ বুঝে সংশ্লিষ্ট ড্রেজার সিন্ডিকেট মহলটি কদিন বাদেই ফের এসব ভরাট বাণিজ্য শুরু করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পাশে সূর্য খানের বাড়ির দক্ষিণ পাশে নদীর শাখা খালে বাল্কহেড থেকে ড্রেজারের সংযোগের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বাল্কহেড থেকে বালু আনলোড করা হচ্ছে। ড্রেজারের ১২ ইঞ্চি মোটা পাইপের দীর্ঘ সংযোগে স্থানীয়দের বসতবাড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট ব্যবহার করা হয়েছে। যত্রতত্র এসব পাইপ লাইনে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ড্রেজারের বিকট শব্দে বসবাসকারীদের সমস্যা হচ্ছে।

মো. ইসমাঈল নামে এক শ্রমিক জানান, ড্রেজারটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের। শ্রমিক হিসেবে রোজে কাজ করছেন তারা।

এ সময় ড্রেজার স্টেশনের পাশে চৌকিতে বসা কয়েকজন যুবকের কাছে জানার চেষ্টা করা হলে তারা বলেন, আলতাফ হোসেনের সাথে কথা বলতে ড্রেজারের বিষয়ে সব জানতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ৩১ জুলাই ২০২৩ খ্রী: ভাগ্যকুল এলাকার হারুন অর রশিদ সারেং নামে এক ব্যক্তি এসব ড্রেজার বন্ধের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন।

ড্রেজার সিন্ডিকেট সদস্য নুর জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে একটু কথা বলেন।

স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলতাফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মিলঝিল করে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত জমি ভরাটের জন্য ড্রেজারটি এনেছি। ছাড়পত্রবিহীন ড্রেজার চালানোর কোন পারমিশন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সুদত্তোর দিতে পারেননি।

ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার হোসেন শাহাদাতের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওদের তো কিছু করে খেতে হবে। তাই আমার নাম দিয়ে ড্রেজারটি চালাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ভাগ্যকুল ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী রাজেশ খান জানান, ড্রেজার চালানোর বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমার কাছে অনুমতি চেয়েছিল। আমি তাকে চালাতে না করেছি। এখন ড্রেজারটি চলছে কিনা তা আমার জানা নেই।

(এএম/এসপি/আগস্ট ২৭, ২০২৩)