নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সিভিল সাজর্ন অফিসের প্রায় ২ কোটি টাকার টেন্ডারে ঘাপলার আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন ও তার লোকজন অত্যন্ত গোপনে ও কৌশলে নিম্নদর দাতাদের সিডিউল ইনফরমার দেখিয়ে উচ্চ দরদাতাদের সিডিউলে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে করে সরকারের ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা রাজস্বের ক্ষতি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় অভিযোগকারী ঠিকাদারদের পক্ষে সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ জারী করা হয়েছে। মঙ্গলবার নওগাঁ জেলা জজ কোটের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসেন এই লিগ্যাল নোটিশ জারী করেন। এর আগে একই ঠিকাদাররা ওই ঘটনায় হস্তক্ষেপ কামনা করে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পাঠিয়েছেন। বর্তমানে বিষযটি শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগকারী ঠিকাদার বিভাস কুমার মজুমদার, মুক্তির মোড় নওগাঁ, মের্সাস এন এল ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার নাফিউল হোসেন কেতন ও মের্সাস জিম মেডিসিন সেন্টারের প্রোপাইটার আসাদুজ্জামান সিদ্দিকীর পক্ষে লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ওষুধ, যন্ত্রপাতি, লিলেন কাপড়, গজ-ব্যান্ডিজ-তুলা, ক্যামিক্যালস ও আসবাপত্র সরবরাহের লক্ষে সিভিল সার্জন অফিস ৬টি গ্রুপে প্রায় ২ কোটি টাকার টেন্ডার আহবান করে। আহবানকৃত টেন্ডার অনুযায়ী গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৬টি গ্রুপের কাজে ৬৯টি সিডিউল জমা পড়ে। ওইদিন অভিযোগকারীগন সিডিউলের শর্ত পূরন করে দরপত্র দাখিল করেন। ওইদিন উপস্থিত ঠিকাদারদের স্বাক্ষর নেয়া হলেও তাদের সামনে কোন সিডিউল খোলা হয়নি। বার বার জিজ্ঞাসা করার পরও সিএসের পক্ষে এব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। সিডিউল খোলার ৭০ দিন পর আপনি অর্থের লোভে পক্ষপাতিত্ব করে সরকার এবং অভিযোগকারীদের আথির্ক ক্ষতি সাধন করে সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাসপাতালে মালামাল সরবরাহের কাজ দিয়েছেন। এতে করে অভিযোগকারীদের মানসিক ও ব্যবসায়ীক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

আগামী ৭ দিনের মধ্যে অভিযোগকারীদের সিডিউলের সমস্ত কাগজপত্র ও সিদ্ধান্ত ওই আইনজীজীর সেরেস্তায় জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগে আরো বলা হয়, একটি টেন্ডারের কাজ ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার নিয়ম থাকলেও সিভিল সার্জন অফিস তা দ্রুত না করে নানা টালবাহানার আশ্রয় নেয়। তাদের দাখিলকৃত সিডিউল গুলো সরকারী দরের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ কমে সিডিউল দাখিল করা হয়েছিল। অথচ সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আলাউদ্দিন নিজের পছন্দের লোকজনের দাখিলকৃত সরকারী মূল্যের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ বেশী দরের সিডিউলে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে গত রবিবার চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ফাইল পাঠিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, যারা কাজ পায়নি, তারাই ৪০/৫০ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে বলে প্রচার করছেন। টেন্ডারে সকল নিয়মনীতি মানা হয়েছে। এখানে কোন অনিময় বা দূনীর্তি করা হয়নি। আর সময়মত লিগ্যাল নোটিশের জবাবও দেয়া হবে।
(বিএ/এএস/এপ্রিল ৩০, ২০১৪)