নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের তারাকান্দায় নিখোঁজের ১৩ দিন পর, ঘটনায় জড়িত মোছাঃ সখিনা বেগম (৪০) ও তার স্বামী রাজমিস্ত্রী মোঃ শাহজাহান মিয়া (৪৫)দেরকে আটক করে, পরকিয়ার বলি প্রেমিক বাবুল মিয়ার (৪৫) লাশ উদ্ধার করেছে তারাকান্দা থানার পুলিশ। এব্যপারে জেলা পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানিয়েছে।

পুলিশ জানান, গত ২৪ আগষ্ট রাত অনুমান ২৩.৩০ ঘটিকায় পানের আড়তের কর্মচারী বাবুল মিয়া তার পরকিয়া প্রেমিকা গার্মেন্টস কর্মী মোছাঃ সখিনা বেগম (৩৫) এর সাথে কাশিগঞ্জ বাজার হতে অজ্ঞাতনামা সিএনজিযোগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় । এ ব্যপারে তারাকান্দা থানায় জিডি নং-২১৪, তারিখ-০৫/০৯/২০২৩ খ্রি. লিপিবন্ধ করা হয়। উক্ত জিডির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানকালে স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য ও তথ্য-এসআই(নিঃ) শাহাদত আলম খান দ্রুত প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে।

ফুলপুর সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আতাহারুল ইসলাম তালুকদার, তারাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়েরসহ একটি আভিযানিক দল গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটনের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন বাদাম নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম বাবুল মিয়ার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জড়িত মোছাঃ সখিনা বেগম (৪০) ও তার স্বামী রাজমিস্ত্রী মোঃ শাহজাহান মিয়া (৪৫)দেরকে আটক করেন।

জানা গেছে, আটককৃতদ্বয়ের তথ্যে বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে তারাকান্দা থানার পুলিশ পার্শ্ববর্তী পূর্বধলা উপজেলার সিধলং বিল থেকে বাবুল মিয়ার লাশ উদ্ধার করে। নিহত বাবুল মিয়া তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের মৃত হাসেন আলীর ছেলে। তাদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি মোতাবেক পূর্বধলা উপজেলার সিধলং বিল থেকে পুলিশের আভিযানিকদল লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, কোদালিয়া গ্রামের মৃত হাসেন আলীর ছেলে বাবুল মিয়ার সাথে মামাতো বোন সখিনা বেগমের সাথে পরকিয়া সম্পর্ক ছিল। অবৈধ সর্ম্পকের ঘটনা স্বামী জানতে পেরে স্ত্রীকে সাবধান করা সত্বেও তাদের প্রতিরোধ করা যায়নি।এ ঘটনার জের ধরে স্ত্রী সখিনাকে দিয়ে তার স্বামী শাহজাহান মিয়া তার মামাতো ভাই বাবুল মিয়াকে গত ২৪ আগস্ট ডেকে নিয়ে আসে। পরে পূর্বধলা থানাধীন মহিষবেড় এলাকায় জনৈক জয়নাল আবেদীন মাস্টারের পুকুরের দক্ষিণ পাশে নিয়ে গত ২৫ আগষ্ট রাত অনুমান ০২.৩০ ঘটিকায় হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

সেই রাতেই দুজনে মিলে বাবুল মিয়াকে হত্যা করে সিধলং বিলের মাঝ খানে ছালার বস্তার ভিতর ভরে একটি খুটি দিয়ে পুতে রাখে।

এ ঘটনার পর থেকে পরিবার জানে বাবুল মিয়া নিখোঁজ রয়েছে। বাড়ির অনেকেই জানতো সখিনার সাথে বাবুল মিযার পরকিয়া প্রেমের ঘটনা। তাই তারা নিখোঁজের ঘটনাটি খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। অবশেষে গত ৩ সেপ্টেম্বর বাবুল মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া তার বাবা নিখোঁজের ঘটনায় তারাকান্দা থানায় একটি জিডি করে। সেই জিডি মোতাবেক ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জরিত তার মামাতো বোন সখিনা বেগম ও তার স্বামী শাহজাহান মিয়াকে ঘটনার সাথে জরিত সন্দেহে ঢাকার তুরাগ এলাকা থেকে আটক করে।

তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সিধলং বিল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ ব্যাপারে তারাকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

(এনআরকে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৩)